প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম-এর উদ্যোগে “শেখ হাসিনা : নেতৃত্ব, মানবিকতা ও দূরদৃষ্টি” শীর্ষক সেমিনার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে (২য় তলা, ভিআইপি লাউঞ্জে) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক আইজিপি ও কলামিস্ট এ কে এম শহীদুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও কলামিস্ট অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহাতাব (স্বপ্নীল) ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামালসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। সেমিনারে বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহন করেছিলেন।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া) এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও ফোরামের সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, "আজকে প্রধানমন্ত্রী যে উচ্চতা ও দুরর্দশীতা প্রমাণ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের আগে কোন সরকারের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা পরিপুর্ণ হয় নি। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কোন পঞ্চবাষির্কী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেন নাই। তাদের কোন পরিকল্পনা ছিল না , কোন দূরদর্শী চিন্তাও ছিল না। "
ড. আলম আরো বলেন,"আওয়ামী লীগ ৯৬ তে ক্ষমতায় এসে ৯৭ সালে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিলেন। আগের পরিকল্পনা সংস্কার করলেন । শুরুতেই প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দিলেন । মুদ্রাস্ফীতি কমালেন, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ন বাংলাদেশ গড়লেন। বড় বড় বন্যা মোকাবেল করলেন। শান্তি চুক্তি করলেন। বয়স্কভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ বিভিন্ন ভাতা চালু করলেন । এসব প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করা সম্ভব হয়েছে।"
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, " প্রধানমন্ত্রী সবসময় পরিকল্পনায় বিশ্বাসী ছিলেন। ২০০২-০৯ পর্যন্ত কোন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ছিল না। তখন বিশ্বব্যাংক একটা পেপার দিতেন এবং তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সেভাবে পরিচালনা করতেন। তারা কোন পরিকল্পনাই করতে পারতেন না। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দীর্ঘ মেয়াদী রুপকল্প-২০২১ হাতে নিলেন।"
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেন। লক্ষ্যগুলোর মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, গড় আয়ু ৭২ করা সহ আরো অনেক পরিকল্পনা হাতে নিলেন। এর মধ্যেই আমার ২০১৫ সালে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হলাম। আমরা দ্রুত আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছালাম। এভাবে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পূর্ব পরিকল্পনা ছিল। প্রতি বছর আমরা সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছি।"
পরিকল্পনার কথা উল্লেখ্য করে বলেন," আমাদের প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা মাফিক দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা রুপকল্প-২১ এ থেমে নেই। আমরা রূপকল্প-৪১ হাতে নিয়েছি। বর্তমানে দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ সব দিক দিয়ে এগিয়ে। মাতৃ মৃত্যুহার কম, শিশু মৃত্যুহার কম এবং নারীর ক্ষমতায়নে আমরা এগিয়ে আছি। এমডিজি লক্ষ্য পূরণ করে আমরা ১২টি পুরস্কার পেয়েছি। এমডিজির ২১ টি লক্ষ্যের মধ্যে আমরা ২০ টি পূর্ণ করেছি । এসডিজি আমরা ২০৩০ এর মধ্যে অর্জন করবো। সে ক্ষেত্রে আমরা একশন প্ল্যান তৈরি করেছি এবং কাজ করছি।"
শুদ্ধি অভিযান উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য ধরে রাখতে হলে আমাদের শুদ্ধি অভিযান প্রয়োগ করতে হবে। ইতোমধ্যে এই অভিযান শুরু হয়েছে। যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হলো তখন কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে। তখন থেকেই আমাদের শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি প্রয়োগ করেছেন। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চালিয়েছেন। তিনি ক্যাবিনেট সদস্যদের বিচারের আওতায় এনেছেন। কাউকেই তিনি ছাড় দিচ্ছেন না।"
তিনি আরো বলেন, "শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ দূর করতে হবে । সামাজিকভাবে প্রচারনার মধ্য দিয়ে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে। রাজনৈতিক উগ্রবাদিতা পরিহার করতে হবে। কোন নেতা যেন জনবিচ্ছিন্ন না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।"
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, "জগনগনের মাঝে সঠিক বার্তা পৌঁছাতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে দল যেন জনগনের সহানুভূতি না হারায়।"
নতুনদের সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এখনও প্রচুর ত্যাগী নেতা আছে । তাদের সুযোগ দিতে হবে। নতুনদের সুযোগ দিতে হবে।"