দীর্ঘ ১৯ বছর পর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. তারিকুজ্জামান ওরফে কনককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগ। রাতে ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রাজধানীর মিরপুরের ১০০ ফিট এলাকা থেকে রোববার বিকেল ৩টার দিকে তারিকুজ্জামান ওরফে কনককে গ্রেপ্তার করা হয়। কনক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।’ তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় একটি সমাবেশ অংশ নেন। সেখান থেকে কলারোয়া থানা হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন তিনি। পথিমধ্যে কলারোয়া থানাধীন তুলশীডাঙ্গায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা হয়।
গ্রেপ্তার তারিকুজ্জামান হামলার দিন সকাল সাড়ে ৯টায় কলারোয়া থানা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হন। দলের কার্যালয়ে নেতাদের মাধ্যমে জানতে পারেন, শেখ হাসিনা কলারোয়া থানার তুলশীডাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাবেন। ওই খবর পেয়ে বিএনপির অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনিও তুলশীডাঙ্গায় সড়কে যাযন। পরে তারা একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে সড়কে যানজটের সৃষ্টি করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে কলারোয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে রাস্তার যানজট নিরসনের চেষ্টা করেন এবং একপর্যায়ে বাসটি সরিয়ে ফেলে পুলিশ।
ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার গাড়িবহর ঘটনাস্থলে চলে আসে এবং যানজটে পড়ে। ওই সময় অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারিকুজ্জামানও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীর গাড়িবহরে হামলা করে। ওই সময় শেখ হাসিনাকে বহন করা গাড়িটি অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও এমপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমানের গাড়িসহ অন্যান্য গাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
ওই হামলায় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনায় ২০১৪ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। বিচার প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীর। রায়ে সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া বাকি ৪৭ জন আসামিকে চার বছর থেকে শুরু করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।