মসজিদে নামাজ আদায় কালে ইদানিং চেয়ার, টুল ইত্যাদির ব্যবহার দেখা যায়। এটা নিয়ে কোন কোন জায়গায় ধর্মীয় বিরোধ, পক্ষ-বিপক্ষ ওয়াজ নসিয়ত করতে দেখা যায়।
এরকম অবস্থায় নামাজ আদায় করলে তা কতটুকু সহি শুদ্ধ হবে তা বিজ্ঞ আলেম-ওলামাগণ বলতে পারবেন। যদিও সর্বজন গ্রাহ্য এরকম আলেম-ওলামা আজকাল খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল।
আমি এসব বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ নই। তথাপিও নামাজ আদায়ের বিষয়ে মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশনা যথাযথ নিয়মে তা আদায় করতে হবে। দাঁড়িয়ে সম্ভব না হলে বসে আদায় করতে হবে, বসে আদায় করতে না পারলে শুয়ে আদায় করতে হবে, শুয়ে আদায় করতে না পারলে ইশারা-ইঙ্গিতে আদায় করতে হবে, এমনটি বিধান রয়েছে ইসলাম ধর্মে।
এখন এরকম পরিস্থিতিতে নামাজ আদায়ের জন্য কি কি বিষয় দায়ী তা অনুসন্ধান করা যেতে পারে।
নিশ্চয়ই যারা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করেন তারা তাদের শারীরিক দুর্বলতা, অসুস্থতা, জটিলতার কারণেই এমনটা করে থাকেন মর্মে আমি বিশ্বাস করি। এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল অনেক ইমামগণ কম দায়ী নয়।
দীর্ঘ সময় ধরে নামাজের আগে পরে লম্বা বক্তৃতা, ওয়াজ নসিয়ত করা, মুসল্লিদের বয়স , শারীরিক সমস্যা, দুর্বলতা, ধৈর্য্য ইত্যাদি বিবেচনায় না নিয়ে নাতিদীর্ঘ ইবাদতের জন্যই এমনটা ঘটে থাকে। অথচ ইমামের দায়িত্ব রয়েছে ইবাদত কালে কোন মুসল্লির যাতে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটে এমনকি লম্বা সময় কালে বয়ানের জন্য কারো ওযু ও পাক পবিত্রতা নষ্ট হয় এমন কোন পরিস্থিতির যাতে সৃষ্টি না হয়।
আমার তো মনে হয় শুধু চেয়ার-টেবিলের বিপক্ষে ওয়াজ নয় বরং এসকল অসুস্থ্য শারীরিক দুর্বল মুসল্লিদের কতজন অজু প্রাকৃতিকভাবেই ভঙ্গ হয়ে গেছে তারপরও মসজিদে বসে আছেন তার সংখ্যা অনেক বেশি।
অনেক অসুস্থ্য ও দুর্বল মানুষ রয়েছেন লম্বা সময় মসজিদে থাকলে প্রাকৃতিক ভাবেই তার ওযু ভেঙে যায়, আর ফরজ ওযু ভেঙ্গে গেলে নামাজ কবুল হওয়ার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
এক্ষেত্রে সকল মুসল্লিদের সার্বিক বিবেচনায় অতি লম্বা সূরা না পড়া, দীর্ঘ সময় নিয়ে নামাজের আগে পরে ওয়াজ না করা, এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ্য মুসল্লিদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে তাদের নামাজ কিভাবে কতটুকু সময় নিয়ে আদায় করতে পারবে তার সুনির্দিষ্ট ধারণা দেওয়া। অনেক জায়গায় দেখা যায় ঘণ্টাব্যাপী মোনাজাত করতে, দু'রাকাত নামাজ এর বিপরীতে। বরং মোনাজাতকালে অনেক মুসল্লির ওযু ভেঙে যায়।
এক্ষেত্রে ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকদের সুস্পষ্ট মতামত দেওয়া প্রয়োজন।
(সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের ফেসবুক থেকে নেওয়া)