#বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করছেন শেখ হাসিনা: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। #বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন শেখ হাসিনা: নাসির উদ্দিন আহমেদ। #শেখ হাসিনার হাত ধরে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে: অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা।
আমাদের আজকের বাংলাদেশের যে উন্নতি, ভিত্তি সেটা কতটা শক্ত। তা আমাদের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট; এইগুলো দেখে কিন্তুধরেই নিতে পারি যে কতটা স্থিতিশীল ও টেকসই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছি আমরা। বিশেষ করে করোনাকালে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যখন অর্থনীতি ঋণাত্মক তখন আমাদের দেশের অর্থনীতি ধনাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন শেখ হাসিনা। সেটা হলো বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশকে উন্নত অবস্থানে নিয়ে গেছেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৭২তম পর্বে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বেলজিয়াম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, আজকে এই দিনটিতে জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো ভাষণ দিয়েছিলেন। আজকে তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে ভাষণ দিবেন বাংলায়। স্বাধীন বাংলার উন্নয়ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু যে কাজগুলো শুরু করে গিয়েছিলেন তা তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি, মাঝপথেই তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের আদর্শিক জায়গা থেকে পিছিয়ে ফেলা, আমাদের সংবিধানকে কলঙ্কিত করা, বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করা থেকে শুরু করে আমাদের প্রত্যেকটি জায়গাতেই পেছনে ফেলা দেওয়া হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে আজকের এই অবস্থানে টেনে তুলেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু যেখানে থেমে গিয়েছেলেন সেখান থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আবার বাংলাদেশকে টেনে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে তা কিন্তু এতো অল্প সময়ে এখানে তুলে ধরা যাবে না। এবং আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরে তাঁর ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন করতে যাচ্ছি আমরা, সেখানে সে সময় অনেক টকশো হবে, অনুষ্ঠান হবে, তাকে নিয়ে লেখালেখি হবে তার বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে। আমার কাছে যেটা মনে হয় আজকের এই নশ্বর পৃথিবীতে ৭৫ বছর বেঁচে থাকাটাই বড় অর্জন আর সেটা যদি গৌরবের হয় তাহলে তো সেটা আরও বড় অর্জন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এইটুকু অর্জন আরও আগেই অর্জিত করে ফেলেছেন। তিনি যে সব কাজের জন্য অমরত্বের দিকে চলে গেছেন বা আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন সেটা নিয়েও ২৮ তারিখে বিস্তর আলোচনা হবে। আমি একটু অন্য প্রেক্ষাপটে আলোচনা করতে চায় সেটা হলো, আমাদের আজকের যেই উন্নত বাংলাদেশের ভিত্তি সেটা কতটা শক্ত। আমাদের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট; এইগুলো দেখে কিন্তু আমরা ধরেই নিতে পারি যে কতটা স্থিতিশীল ও টেকসই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছি আমরা এবং বিশেষ করে করোনাকালে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যখন অর্থনীতি ঋণাত্মক তখন আমাদের দেশের অর্থনীতি ধনাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু অর্থনীতিক সমৃদ্ধির উপর দাড় করাতে হয় তখন কিন্তু আমাদের আদর্শিক মুক্তি ও সঠিক লোকের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও সঠিক জায়গাতে তাদের নিয়ে আসতে হয়। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন শেখ হাসিনা সেটা হলো বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশকে উন্নত অবস্থানে নিয়ে গেছেন।
নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মাসে ৭৫ এ পদার্পণ করবেন। এই মাসেই ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তাঁর সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতিসংঘের বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়িয়েছেন। এখন জাতিসংঘের সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করছে বাংলাদেশিরা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একাধারে একজন মমতাময়ী মা, একজন সুদক্ষ প্রশাসক। তাকে বলা হয়, গণতন্ত্রের মানসকন্যা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা হচ্ছেন উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি স্বপ্ন দেখান, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। তিনি মানুষকে হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন। তিনি সুশাসনের জন্য ইস্পাতসম কঠিন, মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি কারো সাথে আপোষ করেন না। এই করোনা সংকটকালে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের রাষ্ট্র নেতারা যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন সফলতার সাথে এই সংকট মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। এদেশের একজন মানুষও না খেয়ে থাকবে না, তিনি ত্রাণ দিয়ে তার কথা রক্ষা করেছেন। শুধু করোনা নয়, একই সময় প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং কয়েক দফা ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সফলতার সাথে মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। এই করোনা সংকটের সময় বাংলাদেশের রেমিটেন্স রেকর্ড গড়েছে। এত অল্প সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন নিয়ে কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি আছেন বলেই বাংলাদেশ এখনো কক্ষচ্যুত হয়নি। তারই সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশকে প্রযুক্তিখাতে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করছেন। তার কারণেই বাংলাদেশে এখন বিদেশি বিনিয়োগ প্রতি নিয়তই বাড়ছে। জাতিসংঘে সম্মানজনক অবস্থানে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভিশনারী লিডার। জাতিসংঘ হচ্ছে বিশ্ব ক্যাবিনেট। আমরা জাতিসংঘের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবো এটাই আমার প্রত্যাশা।
অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন করার লক্ষে বঙ্গবন্ধু যে যখন দেশের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত তৈরি করার কাজে নেমে পড়েছিলেন ঠিক তখনই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত দেশি-বিদেশি চক্রের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে সংঘটিত হয় বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক, ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডি। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির জন্য যেমনি, তেমনি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের জন্য ছিল এক মহাবিপর্যয়কর ঘটনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত জীবন যাপনে বাধ্য হয়ে অবশেষে ১৭ মে ১৯৮১ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার প্রিয় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ‘ভোট ও ভাতের’ অধিকার আদায় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শুরু হয় তাঁর জীবনের এক সুদীর্ঘ সংগ্রাম। শেখ হাসিনার এ সংগ্রামে জাতির পিতার মতো হাতিয়ার ছিল সততার আদর্শ ও শক্তি, লক্ষ্য অর্জনে তাঁর সম্পূর্ণ নিবেদিত প্রাণ, জনগণের কল্যাণে শতভাগ অঙ্গীকার, তাঁর প্রতি জনগণের অগাধ বিশ্বাস ও মমত্ববোধ, সর্বোপরি দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের মতো নিবেদিতপ্রাণ কর্মীনির্ভর শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠন। ১৯৮১ সাল থেকে প্রায় ৪ দশক ধরে তিনি সভানেত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগের সফল নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রযাত্রায় বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের রূপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নমুখী নানা পরিকল্পনার সুফল এখন মানুষের দোরগোড়ায়। মানুষের গড় আয়ু, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, বিভিন্ন কাজে ডিজিটালাইজেশন, সবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। এরপর ১৯৮১ সালে দলের কাউন্সিলে বিদেশ থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা দলের সভাপতি মনোনীত হন। এরপর থেকে টানা ৩৯ বছর ধরে আওয়ামী লীগের মতো বড় দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। তার নেতৃত্বে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয় লাভের পর টানা এখন পর্যন্ত সরকার পরিচালনা করে আসছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে। সব প্রতিবন্ধকতা সমস্যা-সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র পা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সাবমেরিন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলারে উন্নীত, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.২, ফোর-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।