#অমিত সাহস নিয়েই দেশের জন্য কাজ করছেন শেখ হাসিনা: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #বর্তমান বিশ্বে সব থেকে আইকনিক নেত্রী শেখ হাসিনা: ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। #শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত বাংলাদেশ: ড. শাহিনূর রহমান।
আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন সন্নিকটে। তিনি বর্তমানে জাতীয় দায়িত্ব পালন করতেই আন্তর্জাতিক সভায় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে বাবার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। তার শাসনামলেই চলতি বছর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হয়েছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৭১তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন সন্নিকটে। তিনি বর্তমানে জাতীয় দায়িত্ব পালন করতেই আন্তর্জাতিক সভায় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি তার ভাষণ প্রদান করবেন আমাদের জাতির পক্ষ থেকে এবং তা বিশ্বের দরবারে আমাদের প্রতিনিধিত্ব প্রকাশ করবে এবং সেখানে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তিনি সেখানে বাঙলায় বক্তৃতা দিবেন যেটি আমাদের ভাষা এবং সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে আবার নতুন করে সমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করবে। জাতির পিতার সুযোগ্য সন্তান হিসেবে সেই ছোট বেলা থেকে যেভাবে বেড়ে উঠেছেন তা রীতিমতো নজিরবিহীন। তিনি জাতির পিতার সুকন্যা হিসেবে নিজেকে চার দেয়ালের মধ্যে আটকিয়ে রাখেননি, তিনি তার সে সময় থেকেই রাজনীতিতে পা রেখেছেন ও সে সময় থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এই যে বেড়ে উঠাটা ও জাতির পিতার কাছ থেকে শিখে বড় হওয়াটা একেবারেই আলাদা। তা তাকে ঋদ্ধ করেছে এবং সম্পূর্ণ মানুষে পরিণত করেছে। পরবর্তীতে পঁচাত্তরের বিয়োগান্তক ঘটনায় আমরা যখন কিংকর্তব্যবিমুড় হয়ে গেলাম তখন সেই রকম একটি পটভূমিতে শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর সকল ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন। আমাদের দেশের সব থেকে প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন তখন। সব হারানোর বেদনা অন্যদিকে নিজের জীবনের ঝুঁকি, এই অবস্থায় তিনি দেশে এসেছিলেন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। সব হারিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। এজন্য তিনি সফল হয়েছেন। বারবার তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আজকে বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে আনতে তিনি সক্ষম হয়েছেন, যেটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। আজকে হাতে গোনা কয়েকজন রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এটা জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটা স্বাধীন ভূখণ্ড দিয়ে গিয়েছিলেন এবং তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আলোকিত বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ এবং বিশ্ব নেতৃত্বেও জননেত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। আসলে যে এগিয়ে যায় তার দিকে সবাই তাকায়, যে দেশ এগিয়ে যায় তার দিকেই সবাই তাকায়, এটাই বাস্তবতা। আসলে বঙ্গবন্ধুকে জানলে বাংলাদেশকে জানা হয়ে যায়, বাংলাদেশকে জানলে বঙ্গবন্ধুকে জানা হয়ে যায়। ঠিক তেমনি আধুনিক বাংলাদেশকে জানলে শেখ হাসিনাকে ও শেখ হাসিনাকে জানলে আধুনিক বাংলাদেশকে জানা হয়ে যায়। জননেত্রী শেখ হাসিনা পারিবারিকভাবেই রাজনৈতিক বলয়ে বড় হয়েছিলেন। পঁচাত্তরের পর দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তিনি যখন আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরলেন তখন অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল তার সামনে। প্রথমে দলকে সুসংগঠিত করা, সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, যুদ্ধাপরাধী কিংবা পঁচাত্তরের খুনিদের বিচার কারজ সম্পন্ন করা। আজকের প্রেক্ষাপট যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাবো যে, জননেত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই উপমহাদেশের সব থেকে প্রাচীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ সুসংগঠিত এবং তিনি আজকের পৃথিবীতে নারী নেতৃত্বদের মধ্যে দলের ও দেশের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সেখানে সবাইকে টপকে গিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে বহু বার তার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এ হামলায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের ২৩ জন নেতাকর্মী শহীদ হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের এ সময়ের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন মাত্র সূচিত হয়েছে। তার শাসনামলেই চলতি বছর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হয়েছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার হাত দিয়েই বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, বাংলাদেশ ডিজিটাল দেশে পরিণত হয়েছে এবং উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে বাবার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। ‘রূপকল্প ২০২১’ এর মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ড. শাহিনূর রহমান বলেন, আমি অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী, সফল রাষ্ট্রনায়ক, আমাদের একমাত্র ভরসার জায়গা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মের যে মাস, এই মাসের ২৮ তারিখে তার শুভ জন্মদিন। তাই আমি শুভ জন্মদিনে আগাম শুভেচ্ছা জানাই, তার দীর্ঘ জীবন কামনা করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে অবশ্যই দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড আমাদেরকে দিয়েছেন ১৯৭১ সালে এবং আমাদের সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শত্রু ও দেশি-বিদেশি ঘাতকচক্র সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে তখন দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে ভারত থেকে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তার দল আওয়ামী লীগ। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হন দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রকট আকার ধারণ করে। দ্বিধাবিভক্ত ও ব্র্যাকেটবন্দি হয়ে পড়ে দল। এ পেক্ষাপটে নির্বাসিত জীবনে ভারতে অবস্থানকালে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। ওই বছরের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ওই বছর ১৭ মে তিনি দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। শুরু হয় শেখ হাসিনার আরেক সংগ্রামী জীবন। বঙ্গবন্ধু কন্যা যেদিন দেশে পা রাখলেন সেদিনই মানুষ আশায় বুক বেধেছিলেন। তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে, এবার আওয়ামী লীগ অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। সব হয়েছে। নতুন প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্য তিনি একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের এ ক্রান্তিলগ্নেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জীবন-জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিঃস্বার্থভাবে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট সংকটের শুরু থেকেই তিনি করোনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। করোনা সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিস্ট’, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে।