যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বিতর্কিত সাংবাদিক ড. কনক সারওয়ারের একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে সরকারবিরোধী ভিডিও প্রতিবেদন তৈরি করার বিষয় নিয়ে ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, কনক সারওয়ারের সঙ্গে ফোনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি বিএনপির এক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার ছেলে।
কনক সারওয়ার: টাকা দরকার।
জনৈক ব্যক্তি: টাকা দরকার টাকা পাবেন একমাস আগে গত মাসেও তো আপনাদেরকে টাকাগুলো পাঠানো হয়েছে। আপনার অ্যাকাউন্টে, পাইছেন না টাকাগুলো? টাকা নিয়ে টেনশনের কী দরকার, আপনারা সবাই টাকা টাকা করেন। ফান্ড আপনাদের রেডি থাকে, টাকা পাঠানোতো সমস্যা বাংলাদেশ থেকে। আপনারা জানেন তো ১৪ চ্যানেলে ঘুরাইতে হয়। সরকার আমাদের ওপর সবসময় নজর দিয়ে রাখছে, এইদিকে টাকা পাঠানো ব্যাংকের ওপর নজর দিয়ে রাখছে কিভাবে। প্রতিটা ভিডিও প্রতিটা স্টেটমেন্টের জন্য যদি আলাদা আলাদা করে টাকা নেন তাইলে কেমনে হবে। এগুলাতো মানে এখনকি আপনাদেরকে টাকা না দিয়ে বসে থাকবো আমরা।
কনক সারওয়ার: এখনতো মনে হয় ওই দিকেই যাচ্ছে।
জনৈক ব্যক্তি: ওই দিকে যাচ্ছে মানে কী, টাকা আপনারা পাচ্ছেন। গত সপ্তাহে কনক ভাই ১২'শ ডলার আপনি ফোন করে দুই সপ্তাহে আগে আপনার অ্যাকাউন্টে জমা করেছিলাম ১ হাজার ২০০ ডলার, দুইটা ভিডিওর জন্য। এবারও আপনাদেরকে আমি বলছি যেগুলো বাকি আছে সেগুলো দিয়ে দেওয়া হবে আপনার অ্যাকাউন্টে। হুন্ডি করে টাকা পাঠানো আপনি জানেন বাংলাদেশ থেকে কত প্রবলেমের কাজ। তারেক ভাই একটা কথাই সব সময় বলে আপনাদের টাকা যেন কোনোভাবে মাইর না যায়। টাকাপয়সা যেন আপনারা সবসময় পান। আপনাদের ব্যাপারে সবাই খুব আন্তরিক। আমরাও আন্তরিক। দলের জন্য করছেন। কিন্তু টাকার প্রশ্ন আসলে আপনারা একটু এইভাবে...ঊনিশ-বিশতো হতেই পারে তাই না, ঊনিশ-বিশতো হইতে পারে। গত কয়েকদিন আগে আপনাকে আরেকটা ভিডিও বানাইতে বলছিলাম। আপনি সেইটা বানান নাই, পারে আবার আমতা আমতা করে বানাইছেন।
কনক সারওয়ার: ওইটাও নামানো হইছে।
জনৈক ব্যক্তি: কী নামাইছেন, আপনি আপনি আসলে কী নামাইছিলেন, ওই ভিডিওটাতে। আপনাকে বলেছিলাম, ওই জয়কে নিয়ে একটা স্ক্যান্ডেল দেখবেন, সেই স্ক্যান্ডেলের এগিনিস্টে আমি আপনাকে কতগুলো স্ক্রিনশট পাঠিয়েছিলাম যেগুলো বানানো হয়েছিল অনেক কষ্ট করে, কষ্ট করে ৫-৬ দিন ধরে খালি জিনিসগুলো বানানো হয়েছিল। আপনাকে বলেছিলাম ওইটা নিয়ে ভিডিও করেন, জয়কে একটু ধরেন। জয়ের স্ক্যান্ডেল নিয়ে একটা স্ক্যান্ডাল বানান। আপনি ওইটা পড়ছেন..! পড়েন নাই। আপনি আপনার মতো করে এমনি একটা ভিডিও দিলেন, আপনি আপনার মতো করে, নিজের মতো করে মনগড়া কিছু কথা বললেন, এটাকে ছেড়ে দিলেন। তাওতো আপনাকে পে করা হচ্ছে এগুলার জন্য। কোনো অবজেকশন কিন্তু দেওয়া হয় নাই। ওইটার জন্যও আপনাকে পে করা হবে। যেটা আপনাকে করতে বলা হয় নাই ওইটার জন্যও আপনাকে পে করা হচ্ছে, সো..!
কনক সারওয়ার: অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়....
জনৈক ব্যক্তি: বাড়াবাড়ি আমরা করছি না আপনারা করছেন..! আপনারা এখন বাড়াবাড়ি করছেন না টাকার জন্য..?
সাংবাদিক কনক সারওয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় গ্রেপ্তার করে। ৯ মাস জেলও খেটেছেন তিনি।
এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান সাংবাদিক কনক সারওয়ার। আমেরিকায় অবস্থান করে সরকারিবিরোধী নানা ধরনের প্রতিবেদন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করেন।
এছাড়াও গতবছর ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগে ইউটিউবসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম থেকে প্রবাসী সাংবাদিক কনক সারওয়ারের কন্টেন্ট সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।