ঢোল-তবলা বাজিয়ে নেচে-গেয়ে কিশোরের মরদেহ দাফন করার ঘটনায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের আলোচিত সেই ভণ্ডপীর আব্দুর রহমান ওরফে শামীমকে (৬৫) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
কথিত ভণ্ডপীর শামীমকে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে হাক্কানী দরবার শরিফের পক্ষ থেকে খালিদ হাসান সিপাই ধর্ম অবমাননাসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ এনে কথিত ভণ্ডপীর শামীমের বিরুদ্ধে গত ২৯ জুন কুষ্টিয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালতের নির্দেশে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে দৌলতপুর থানা। মামলার একদিন পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাকে নিজ আস্তানা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বাদী খালিদ হাসান সিপাই জানান, প্রত্যেকের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই বলে ধর্মকে বিকৃত করে সমাজের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির করার অধিকার কারও নেই। ধর্মকে বিকৃত করার জন্য একজন মুসলমান হিসেবে নিজ উদ্যোগে তিনি মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, শামীমের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ছাড়াও মানুষকে জিম্মি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজিসহ মামলার এজাহারে আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে আঁখি (১৭) ক্যান্সারে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। মহাসিন আলী ওই গ্রামের কথিত ভণ্ডপীর শামীমের অনুসারী হওয়ায় ছেলের মরদেহ তার হাতে তুলে দেন।
ওইদিন রাতে শামীম তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আঁখির মরদেহ দাফন করেন। স্থানীয় মুসল্লিরা এর তীব্র বিরোধিতা করলেও শামীম ও তার অনুসারীরা কর্ণপাত না করেই তাদের রীতি মেনে মরদেহ দাফন করেন। নেচে-গেয়ে মরদেহ দাফনের ওই ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়।