রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে
#সার্বিক বিবেচনা করেই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে: অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা। #শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে: সৈয়দ আহমেদ সেলিম। #শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরকেও সচেতন হতে হবে: আয়শা জাহান নূপুর।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:৫২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আমরা ভেবেছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগে খুলবে এবং পরবর্তীতে স্কুল-কলেজ খুলবে, কিন্তু সরকার এখানে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে আগে স্কুল-কলেজ খুলেছে। আমরা মনেকরি স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও কতিপয় অভিভাবক ব্যতীত প্রায় সকলের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে ব্যাপক আগ্রহ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা ছিল অত্যাধিক সতর্ক।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৬৪তম পর্বে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আহমেদ সেলিম,  কবি ও শিক্ষক আয়শা জাহান নূপুর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।

অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের আলোচ্য বিষয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণচাঞ্চল্য। আমরা খুবই খুশি যে সরকার একটা সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে। আমরা ভেবেছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগে খুলবে এবং পরবর্তীতে স্কুল-কলেজ খুলবে, কিন্তু সরকার এখানে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে আগে স্কুল-কলেজ খুলেছে। আমরা মনে করি স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও কতিপয় অভিভাবক ব্যতীত প্রায় সকলের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে ব্যাপক আগ্রহ। বিশেষকরে শিক্ষার্থীরা ছিল অত্যাধিক সতর্ক। এটি অবশ্যই একটি শুভ লক্ষণ। প্রতিষ্ঠানে এসে শিক্ষার্থীরা যদি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠে তো এটি হবে আমাদের জন্য অত্যন্ত মঙ্গলজনক। শিক্ষার্থী তথা সন্তানের দেখাদেখি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করবেন অনেক অসচেতন অভিভাবক। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মান্য করা ও টিকা প্রদান দ্রুত সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্টদের টিকা প্রদানে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বিশ্বের অনেক দেশে স্কুল চালুর পর কিন্তু করোনা বেড়েছে। তারপর আবারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে। অবহেলার কারণে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হয়েছে সাধারণ মানুষের। তাই আমাদের কোনো অবস্থায়ই বিষয়টিকে অবহেলার চোখে দেখলে চলবে না। সপ্তাহে ক্লাস যে ক’দিন হোক, করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি সচেতনতা। মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।

সৈয়দ আহমেদ সেলিম বলেন, মহামারি করোনা সংক্রমণের কারণে প্রায় দেড় বছর সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম খোলা হলো প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। প্রথম দিনেই অনেক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রায় শতভাগ ছিল শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। করোনার স্বাস্থ্যবিধি তো মানতেই হবে, কিন্তু শিক্ষকদের আরও বেশি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিক্ষকরা নিশ্চয়ই চেষ্টা করবেন শিক্ষার্থীদের প্রতি ব্যক্তিগত ভাবে মনোনিবেশ করার। জানার চেষ্টা করবেন, এমন এক কঠিন সময়ে পড়াশোনায় কতটা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও জরুরি জানা যে, এই সময়ে সে কেমন ছিল এবং তার বাড়ির পরিস্থিতি কেমন ছিল, কীভাবে মোকাবিলা করেছে কোভিড পরিস্থিতি। যারা আনলাইনে ক্লাস করেছে বা করতে পেরেছে, আর যারা পারেনি- একই ক্লাসে এমন দু’পক্ষকেই পাওয়া যাবে। যারা পারেনি তারা স্বাভাবিক কারণেই কিছুটা পিছিয়ে থাকবে। এরা যাতে অন্যদের কাছাকাছি যেতে পারে তার জন্য স্পষ্টতই কিছু করা প্রয়োজন। সবার আগে জরুরি স্কুলের ভেতরে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ করা। সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার বিকল্প নেই। মাস্ক ছাড়া শিশু, শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। তিন ফুট দূরত্বে বাসার ব্যবস্থা করা, সামাজিক সব রকমের দূরত্ব মেনে চলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র, জীবাণুনাশক ট্যানেল স্থাপন করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। তবে স্কুলের বারান্দা বা গেটে স্যানিটাইজার মেশিনও বসানো যেতে পারে। সর্বোপরি শিশুদের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে শিক্ষকদের কঠোর হতে হলে অভিভাবকদের তা মেনে নিতে হবে। অভিভাবকদেরও এ বিষয়গুলো সন্তানদের বুঝিয়ে স্কুলে পাঠানো দরকার। অর্থাৎ করোনা সংক্রমণ রোধে শিক্ষক ও অভিভবকদের দায় সমান। স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের বাইরে বের হওয়া বন্ধ করতে হবে। 

আয়শা জাহান নূপুর বলেন, আমরা প্রায়শই একটা কথা বলি যে, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফের যে প্রাণ চঞ্চলতা ফিরে এসেছে। আমরা জানি গতবছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে ১৭ মার্চ ঘোষণা হলও ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে যাতে করে শিক্ষার্থীরা যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হতে পারে। একেবারে প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত যখন সকল ক্লাস খুলে দেওয়া হলেও তখন যারা উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের কাছে তাদের ক্লাস কিন্তু আর নতুন কিছু নয়, কিন্তু যে প্রথম শ্রেণির ছাত্র তার কাছে কিন্তু এটা একেবারেই এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। যে সকল এলাকায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে সকল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখুন। কোন এলাকায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে বন্ধ না করে কেবল সেই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখুন এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে পুনরায় খুলে দিন। এভাবেই পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো অঞ্চল ভিত্তিক ট্রায়েল এন্ড এরর ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে আমাদেরও। দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুদের মানসিক ও শারীরিক যেমন বিরূপ প্রভাব পড়েছে তেমনি অনেক শিশু বিপথে গেছে। আবার শ্রমজীবীসহ ঝরেপড়া শিশুর সংখ্যা নেহাত কম হবে না। তাই এসব শিশুকে স্কুলমুখী করতে হবে। শিশুদের একটি অংশ সমাজের বখে যাওয়াদের সঙ্গে মিশে নেশাগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি গ্যাংগিং কালচারে অনেকে নাম লিখিয়েছে। সব মিলিয়ে ঝরেপড়া শিশুদের একটি বড় অংশকে যে কোনো মূল্যে স্কুলে ফেরাতে হবে। এজন্য সরকারের আলাদা নজর দেওয়া প্রয়োজন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভোরের পাতা সংলাপ  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]