ইভ্যালি (ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালাচ্ছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার বাসায় এ অভিযানে যায় এলিট ফোর্স। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব-২ ইউনিটের সদস্যরা মোহাম্মদপুরের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। রাসেল ও শামীমা দুজনেই গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে প্রতারণার অভিযোগে বুধবার রাতে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন মো. আরিফ বাকের নামে একজন গ্রাহক, যিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগ্রাম এলাকার বাসিন্দা।
মামলায় ইভ্যালি এমডি মোহাম্মদ রাসেলকে এক নম্বর আসামি ও চেয়ারম্যান শামীমাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। এই মামলায় আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আরিফ বাকের উল্লেখ করেছেন, ইভ্যালির অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পাননি তিনি। নিরূপায় হয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন তিনি।
গত ২৯ মে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ সব মূল্য বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন তারা।
পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়।
সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আরিফ ও তার বন্ধুরা। একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য প্রদান ও টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে যান আরিফ ও তার বন্ধুরা।
মামলার এজাহারে আরিফ উল্লেখ করেন, ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন।
একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা ইভ্যালির এমডি রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে তাকে (আরিফ) ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন এবং তাদের পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদানের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন।
এতে তারা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন জানিয়ে আরিফ এজাহারে আরও উল্লেখ করেছেন, পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় তিনি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি।
ভোরের পাতা/অ