আফগানিস্তানে মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন, তবে ছেলেদের সঙ্গে এক কক্ষে বসে নয়, বলেছেন তালেবানের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি৷
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মেয়েদের ড্রেসকোডও মেনে চলতে হবে৷
সংবাদ সম্মেলনে নারী সদস্যবিহীন তালেবান সরকারের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি বলেন, ‘‘আমরা ছেলে ও মেয়েদের একসঙ্গে ক্লাস করার অনুমতি দেব না৷ সহশিক্ষার অনুমতি দেয়া হবে না৷’’
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেবার আগেও স্কুলগুলোতে ছেলে মেয়েরা আলাদাই ক্লাস করত৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার সুযোগ ছিল এবং কোন ড্রেসকোড নির্ধারণ করা ছিল না৷
তালেবান বলছে, মেয়েরা চাইলে পোস্টগ্রাজুয়েটও পড়তে পারবে৷ তবে তার জন্য সম্ভব হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা ক্যাম্পাস অথবা অন্তত আলাদা ক্লাসরুম করা হবে৷
এরইমধ্যে আফগানিস্তানের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকক্ষে ছেলে ও মেয়েদের মাঝে পর্দা টানিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে হাক্কানি মেয়েদের জন্য নারী শিক্ষিকা নিয়োগের কথাও জানান৷ যদি এটি সম্ভব না হয় তাহলে পুরুষ শিক্ষকদেরকে শরিয়া আইন মেনে নারী শিক্ষার্থীদের পড়াতে দেওয়া হবে৷
শনিবার প্রেসিডেন্ট ভবনে তালেবান তাদের পতাকা উত্তোলন করে৷ এর অর্থ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব শুরু করেছে৷ তাদের সরকারে কোনো নারী মন্ত্রী নেই৷
দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে তালেবান এমন এক সময়ে এ ঘোষণা দিয়েছে যখন আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা, ব্যক্তি অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়৷
গত ১৫ আগস্ট অনেকটা আকস্মিকভাবেই কাবুল দখল করে তালেবান৷ ক্ষমতা দখলের পর দেশ ত্যাগের চেষ্টায় হাজার হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিজেদের নাগরিক ও দেশ ছাড়তে চাওয়া এমন অনেক আফগানকে সরিয়ে নেয়৷
ক্ষমতা দখলের পর সংবাদ সম্মেলনে তালেবান নেতারা নারী শিক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে বেশ কিছু উদার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিনয়তই দেশটিতে সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীরা তালেবান সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এমন খবর আসতে থাকে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে