দীর্ঘ চারমাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ আহরণ ও বিপনন শুরু করেছে অত্রাঞ্চলের মৎস্য জীবিরা।
রাঙামাটির বিএফডিসি কর্তৃপক্ষের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে বুধবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরনে জাল ফেলে জেলেরা। চারমাস বিরতির পর আবারো নতুন করে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরেছে রাঙামাটির মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে।
এদিকে, জেলেরা জানিয়েছে দীর্ঘ চারমাস বেকার থাকার পর আজ থেকে তারা কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরনের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছেন। এতে করে তারা আবারো স্বচ্ছল জীবনযাপনে ফিরতে পারবে।
অপরদিকে, মৎস্য ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন, এবার একটু দেরিতে মাছ আহরণ শুরু হলেও মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ মাছ আহরণ হবে এবং এতে করে সরকারের রাজস্ব খাতে বিপুল পরিমান রাজস্ব ব্যবসায়িরা দিতে পারবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের ডেপুটি ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম লিখন জানিয়েছেন, দীর্ঘ চার মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। বুধবার ভোর থেকেই বিএফডিসির নিজস্ব পল্টনগুলোতে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে মাছ নিয়ে আসবেন জেলেরা। সেখান যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস সবধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলাপ্রশাসন।
এ বছরও একইভাবে নিষেধাজ্ঞার সময় তিনমাস দেয়া হলেও হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় তিন দফায় আরো এক মাস হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিবন্ধিত জেলেরা প্রতিমাসে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য হিসেবে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা পান। তবে এবার নিয়মতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞা তিনমাসে জেলেরা খাদ্য সহায়তা পেলেও বাড়তি এক মাসের খাদ্য সহায়তা পাননি।
বিএফডিসির বার্ষিক হিসাব বলছে, কাপ্তাই হ্রদ হতে বিএফডিসির অবতরণকেন্দ্রে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭৬৭২ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৯৮১ টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮১২৩, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৪২৩ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৫৪৯ টন মাছ অবতরণ করা হয়। সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে অবতরণ হয়েছে ৬৭৯৪ টন।
এবছরও যদি গত মৌসুমের মতো মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরিত হয়, তাহলে মৌসুমের শেষের দিকে মাছ আহরণে ভাটা পড়বে।
ভোরের পাতা/কে