প্রকাশ: বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:১৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অনেকদিন পর বৃষ্টির দেখা মিলেছে। শুকিয়ে যাওয়া আমনের জমিতে জমেছে পানি। ফোটা ফোটা বৃষ্টিতে ধানগাছ যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সজীব-সতেজ হয়ে উঠছে ফসলের মাঠ। এতে স্বস্তি এসেছে দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর জনপদ ঠাকুরগায়ের রাণীশংকৈল উপজেলার আমন চাষিদের।
রোপা আমন বৃষ্টি নির্ভর। এ মৌসুমে বৃষ্টির ওপর ভরসা করেই চাষীরা আমন চাষ করেন।
বোরোর পর করোনার দুর্যোগেও আমন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার চাষীরা । কিন্তু মৌসুমের শুরুর দিকে পানির অভাবে চাষীরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না আর যেসব জমিতে চারা রোপন করা হয়েছিল পানির অভাবে তার বেশির ভাগ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ধানগাছ বাঁচাতে হতাশায় পড়েন কৃষকরা। শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়েও কুলাতে পারছিলেন না। বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে যায় আমন ক্ষেত অবশেষে বৃষ্টির দেখা পেয়ে চাষীদের হতাশা কেটেছে। এতে আমন ক্ষেতে পানি জমে কৃষকদের কাঙ্খিত পানির প্রত্যাশা পূরণ হয়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে আমনের ক্ষেতে পানি জমেছে। বিশেষ করে উঁচু কৃষি জমিতে পানি জমায় চাষীদের মনে স্বস্তি এসেছে। শুকিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের চারা সতেজ হয়ে সবুজে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আমনের আবাদ গত বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। গত বছর ২১ হাজার ৪৫০ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার ২১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা আমন রোপন প্রায় শেষ করে আমনের ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘদিন পানির অভাব থাকলেও বর্ষার পানিতে তারা নতুন করে আমনে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
ভাংবাড়ি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আবু সালেহ বলেন, বৃষ্টির দেখা না পেয়ে খাল থেকে শ্যালো মেশিনে পানি উঠিয়ে ধানগাছ বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। বৃষ্টি হওয়ায় তার আর বাড়তি খচর গুণতে হবে না।
লেহেম্বা এলাকার কৃষক কবির জানান, প্রত্যেক বছরের মত এ বছর তিনি ৪ একর জমিতে আমন চারা লাগিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পরেছিলেন। অবশেষে বেশ কয়েকদিনের টানা বর্ষণের ফলে তার উঁচু জমিগুলোতেও পানি লাগায় তিনি দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছেন।
বাঁচোর গ্রামের কৃষক রব্বানী জানান, তিনি এ বছর সাড়ে ৩ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। বৃষ্টির পানির অভাবে তার আমনের ক্ষেত শুকিয়ে যাওয়ায় তার দুশ্চিন্তার যেন শেষ ছিল না। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তার আমনের ক্ষেতেও পর্যাপ্ত পানি জমেছে। চারা গাছ এখন বেশ সতেজ হয়ে উঠছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, চলতি মৌসুমে রোপা আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। তবে পানির অভাবে প্রথমের দিকে সামান্য সমস্যা হলেও বেশ কিছুদিনের টানা বর্ষণের ফলে আমন ক্ষেতে পানি জমে আছে। তবে মৌসুমের মাঝামাঝি সময় বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তায় পড়েন কৃষকরা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। বর্তমানে অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ থাকলে আমনের বাম্পার ফলন আশা করা যাচ্ছে।
ভোরের পাতা/কে