ঝিনাইদহ সদরের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীর সকল অপকর্মের মূল হোতা হিসাবে কাজ করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস। এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর পৌর এলাকা থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের সকল নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর থেকে এমন কোনো অপকর্ম নেই যার সাথে সম্পৃক্ত নন ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস। তার সকল অপকর্মের পৃষ্ঠপোষকতায় সদরের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
আব্দর রশিদ নামের একজন তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মী ভোরের পাতাকে বলেন, ঝিনাইদহকে নিজের বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করেন এই জীবন কুমার বিশ্বাস। স্কুলের পিয়ন থেকে শুরু করে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে তাকে টাকা না দিলে এমপির সুপারিশ তো দূরে থাক, কেউ চাকরি পাবে না; এমন একটি অবস্থা বিরাজ করছে।
ঝিনাইদহে ভোরের পাতার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঝিনাইদহের রাইচরন তারিনীচরণ ডিগ্রি কলেজে কলেজে কোনো ধরনের সার্কুলার ছাড়াই ১০ জনকে নিয়োগ দিয়ে ৮০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন এই জীবন কুমার।
এছাড়া ঝিনাইদহ সদরের সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে নিয়মিত সপ্তাহে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও অভিযোগও রয়েছে জীবনের বিরুদ্ধে। এছাড়া এমপি তাহজীব সিদ্দিকীর নাম ভাঙিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলেন জীবন কুমার।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে আসামি ছিনতাই করতে গিয়ে থানায় বোমা হামলাও করেছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করারও অভিযোগ রয়েছে জীবন কুমারের বিরুদ্ধে।
এছাড়া ২০১৪ সালে ঝিনাইদহ-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ছয়জন নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, যিনি বর্তমানে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন সেই জীবন কুমার বিশ্বাসও ছিলেন।
এসব বিষয়ে জীবন কুমার বিশ্বাস ভোরের পাতার এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমি কোনো চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নই। আমি কোথাও থেকে ১ টাকাও চাঁদা নিই নাই। রাইচরন তারিনীচরণ ডিগ্রি কলেজে নিয়োগের ক্ষেত্রেও আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ২০১৪ সালে ঝিনাইদহ সদর আসনে বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিলেন, তাই আমাদের ৬ জনকে মৌখিতভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে আমি নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা)’র সাথে দেখা করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলে তিনি আমাকে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে বলেন। আমি তার কথা মতোই রাজনীতি করছি।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ ২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি প্রতি উত্তর করেননি।