মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে মূলহোতাসহ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর মুগদা থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ রিপন (১৯), মোঃ খোকন (২১), মোঃ মোস্তফা (৪২) ও খুকি (৪০)।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন মতিঝিল বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভিকটিম নাসির কোরবানির ঈদের দিন মামলার ছয় নম্বর আসামী শামীমের সাথে কসাইয়ের কাজ করে। কিন্তু শামীম কাজের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করায় ২৫ আগস্ট সন্ধ্যায় শামীমের কাছে কাজের টাকা চাইতে যান। তখন মোস্তাক ফকির বাঘা শামীমের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে থাকে। কথা বলার এক পর্যায়ে টাকা চাওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে মোস্তাফ ফকির বাঘার সাথে নাসিরের কথা কাটাকাটি এবং ঝগড়া হয়। এরপর কথা কাটাকাটির জের ধরে অন্য আসামীরা দলবদ্ধ হয়ে ওইদিন রাত আনুমানিক ১০টায় মুগদার আমির মিয়ার বাড়ীর সামনে নাছিরের পথ রোধ করে এলোপাথাড়ি লাথি কিল ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে মোস্তাক ফকির বাঘার নির্দেশে মোঃ রিপন মোস্তাক ফকির বাঘার দোকান থেকে গরু কাটার ছুরি নিয়ে এসে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিছন থেকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার কোমরের পিছনে নিচে লেগে গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন নাসিরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিরকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের আত্মীয় স্বজনদের সহায়তায় মিডফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিরকে দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন এবং জানান যে, মিডফোর্ড হাসপাতালে কোনো আইসিইউ বেড খালি নেই। এরপর আত্মীয় স্বজনরা নাসিরকে মিডফোর্ড হাসপাতাল থেকে ইউনি হেলফ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করান। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২৬ আগস্ট ভোর ছয়টায় নাসির মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ প্রলয় কুমার সাহা বলেন, নাসিরের স্ত্রী মোস্তাক ফকির বাঘা, রিপন, খোকন, মোস্তফা, খুকি ও শামীমসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে ২৬ আগস্ট মুগদা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মুগদা থানায় হত্যাচেষ্টাসহ মারামারির একটি মামলা হয়।
গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএমপির সবুজবাগ জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ আলম মোঃ আখতারুল ইসলাম জানান, নাসিরের মৃত্যুর পর ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে নিয়ে এজাহারনামীয়দের গ্রেফতারের জন্য একাধিক টিম গঠন করা হয়। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ২৬ আগস্ট ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল হত্যাকারী রিপনসহ এজাহারনামীয় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দুইজনকে ধরতেও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।