স্বল্পমূল্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ইন্টারনেট প্যাকেজ পৌঁছে দিতে গত বছরের নভেম্বর মাসে দুটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে একটি বেছে নেয়ার কথা গণমাধ্যমে বলেছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের। কিন্তু প্রায় ৯ মাসেও অপারেটরের সাথে চুক্তি সারতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
স্বল্পমূল্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অপারেটরদের সাথে সমন্বয় করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। তার কাছে অপারেটরদের সাথে চুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে মোবাইল অপারেটরদের বেশ কয়েকবার মিটিং হয়েছে। সবকিছু চূড়ান্ত করে আমি রেজিস্ট্রার দপ্তরে ফাইল পাঠিয়েছি। যতটুকু মনে আছে, গ্রামীণফোনে মাসে ২০০ টাকায় ২০ জিবি ইন্টারনেটের একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত হয়েছিল। বাকিটুকু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার থেকে জানতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামীনফোনকে সিলেক্ট করেছিলাম। গত বুধবার (২৫ আগস্ট) গ্রামীণফোনের প্রতিনিধিদের সাথে কথা হয়েছে। আগামী সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে আমরা এ বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১ সেপ্টেম্বর থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সশরীরে চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। তারা এর আগে সুলভ মূল্যের ইন্টারনেটের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা সশরীরে পরীক্ষার ব্যাপারেই জোর দিচ্ছে। তবে আমাদের যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেটা আমরা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা দ্রুত নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন। সে স্মারকলিপিতে যেকোন সিম কোম্পানির সাথে চুক্তির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করার দাবিও ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের কাছে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজের ব্যাপারটি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যেটুকু জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রবি ও গ্রামীণফোনের সাথে বসেছিল। এরপর আর আমাদের কিছু জানায়নি। করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, পদক্ষেপ নিচ্ছি এসব বলে সময় পার করেছে প্রশাসন।
এখনো চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়ার বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী ডাটা না থাকার কারনে ক্লাস করতে পারছে না। এই প্যাকেজটা যদি আগে দেয়া হতো তাহলে তাদের জন্য উপকার হতো।
সামনে এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ যাবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে ধাপে ধাপে পরীক্ষা নেয়ার জন্য আমরা ২৩ তারিখ স্মারকলিপি দিয়েছি প্রশাসন বরারব। তাই আর এই বিষয়টা নিয়ে আগাচ্ছি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গগণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব স্বল্পমূল্যে ডাটা প্যাকেজের না পাওয়ার ব্যাপারে বলেন, স্বল্পমূল্যের ইন্টারনেট প্যাকেজ শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই খুবই জরুরি অনলাইন পরীক্ষা ফলপ্রসূ করার জন্য। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক আগে থেকেই তা চালু করলেও আমরা শুধু আশ্বাসই পেয়ে আসছি।