প্রকাশ: শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১০:০৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস।
জঙ্গিদের মুখপাত্র আমাক নিউজ এজেন্সির টেলিগ্রাম চ্যানেলে এই দায় স্বীকার করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
আমাক নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারন ক্যাম্প এলাকায় পৌঁছাতে সক্ষম হয় আইএসের এক আত্মঘাতী বোমারু। সে মার্কিন বাহিনীর অনুবাদক এবং সহযোগীদের বিশাল জটলায় পৌঁছে বিস্ফোরক বেল্টটি বিস্ফোরিত করে। এতে তালেবান যোদ্ধাসহ প্রায় ৬০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের ওই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১২ জন মার্কিন বাহিনীর সদস্য। এছাড়া বিস্ফোরণে আহত হয়েছে কমপক্ষে আরও ১৪০ জন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, হামলার পর আইএস দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে এক সন্ত্রাসীর ছবিও রয়েছে। ওই ছবিতে দেখা যায়, আইএসের কালো রঙের পতাকার সামনে বিস্ফোরক বেল্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে সেই সন্ত্রাসী। তার মুখমণ্ডলও কালো কাপড়ে ঢাকা। কেবল চোখই দেখা যাচ্ছিল। হামলাকারীর নাম আবদুল রহমান আল-লোগারি বলে উল্লেখ করেছে আইএস। নাম থেকে মনে করা হচ্ছে, হামলাকারী আফগান ছিলেন।
আইএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক বেল্ট পরিহিত ওই সন্ত্রাসী তালেবান নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা, দোভাষী ও সহযোগীদের জটলার পাঁচ মিটারের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। এ বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে তালেবান সদস্যরাও আছেন।
এদিকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের কাছে হার মানবে না। আমরা তোমাদের ক্ষমা করবো না। আমরা (এ ঘটনা) ভুলে যাবো না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবোই এবং তোমাদের এর মূল্য দিতে হবে।
তালেবানের আগ্রাসনের মুখে গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের পতন ঘটে। তারপর থেকেই কাবুল চালাচ্ছে তালেবান।
যদিও তারা সবার জন্য ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে, তবে তালেবান ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তান ত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ কাবুলে বিশেষ প্লেন পাঠিয়ে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়েছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই ১৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কাবুল বিমানবন্দরে এই কার্যক্রমই চলছে এখনো।