বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরও তাঁর আদর্শ বাংলার মাটিতে চির অমর হয়ে থাকবে: নাসির উদ্দিন আহমেদ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১, ১১:২১ পিএম আপডেট: ২৭.০৮.২০২১ ১২:১৩ এএম | অনলাইন সংস্করণ
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী, পাকিস্তানের পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতাকে ধ্বংস করে দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে এদেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল। গত ৪০ বছরে প্রায় ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এই হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরই চূড়ান্ত অপচেষ্টা হয়েছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। সেদিন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি এবং জঙ্গিদের সম্মিলিত প্রয়াসে পাকিস্তান থেকে সরবরাহ করা আর্জেস গ্রেনেড দিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৪৩তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা আফছার খান সাদেক, সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী, পাকিস্তানের পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতাকে ধ্বংস করে দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে এদেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল। এ সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে বেঁচে গেছেন। ইতিহাসের বিরল ও পৈশাচিক এ হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে, বিচারের পথ রুদ্ধ করে এবং সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে খুনিদের পুরস্কারস্বরূপ পুনর্বাসিত করা হয়। পাকিস্তানপন্থিদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফ্রন্টলাইনে নিয়ে আসা হয়। তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও বহু ত্যাগের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি এদেশে অনেকগুলো সাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং এদেশকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এই পদক্ষেপ, নেতৃত্বের দৃঢ়তা, অসীম সাহস এবং সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে দেশ পরিচালনাকে রুখে দিতে আবার নতুনভাবে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। তারই অংশ হিসেবে জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপির নেতৃত্বে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শনিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে রাস্তায় একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ করে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এখানে সমবেত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষ। দলীয় প্রধান ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এই সমাবেশে ছিলেন প্রধান অতিথি। সিনিয়র নেতাদের বক্তব্যের পর শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। যুদ্ধক্ষেত্রের ন্যায় একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে গ্রেনেড। সেদিন শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে জীবনের মায়া তুচ্ছ করে নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরিপূর্বক তাকে নিরাপদ রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে এবং অনেক কষ্ট ও ঝুঁকির মধ্যে গাড়িতে তুলে বাসায় পৌঁছে দেন। গাড়িতে ওঠার সময়ও গুলি চালানো হয়। এতকিছুর পরও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। গণমানুষের দোয়ায় এবং সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশকে ২০২১ সালে একটি মধ্যমআয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে দূরদৃষ্টি ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নিজেকে আত্মনিয়োজিত করেছেন এদেশের মানুষের কল্যাণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সারা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে দেখছে উন্নয়নশীল এক সমৃদ্ধ নুতন বাংলাদেশকে। ধর্মীয় সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত সিদ্ধান্তগুলো উন্নত দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতাদের কাছে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।