‘ক্যাসিনো সম্রাটের’ ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানের ব্যবহৃত বিলাসবহুল হ্যারিয়ার গাড়িটি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গাড়িটি জব্দ করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল।
দুদক সূত্র জানায়, খোরশেদ আলম নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫৭৮৭২) উদ্ধার করা হয়েছে। আরমান গ্রেফতারের পর থেকে তিনিই গাড়িটি ব্যবহার করে আসছিলেন। কালো রংয়ের বিলাসবহুল গাড়িটির কাগজপত্র জব্দ করা হেফাজতে নিয়েছে দুদক।
দুদক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কালো রংয়ের হ্যারিয়ার গাড়ির বিপরীতে পূবালী ব্যাংকের কমলাপুর শাখা থেকে ৩৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন যুবলীগ নেতা আরমান। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে ঋণ নেন তিনি। ঋণের সামন্য কিছু টাকা পরিশোধ করলেও বড় অংশ এখনও বকেয়া। সেই ঋণের সূত্র ধরেই গাড়িটির সন্ধান পায় দুদক।
তদন্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন গাড়ি জব্দের বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত তথ্য জানাতে চাননি।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর আরমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির টাকার বড় অংশ আরমানের কাছে রাখতেন সম্রাট। ‘লাগেজ পার্টি’ থেকে যুবলীগ, ক্যাসিনো ও সিনেমা প্রযোজক হয়ে আরমান দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সব জায়গা।
৯০ এর দশকে বিদেশ থেকে ‘লাগেজ পার্টির’ আনা ইলেকট্রনিক পণ্য বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন এই যুবলীগ নেতা। পরে নিজেই লাগেজ পার্টির কারবারে যুক্ত হন। ২০১৩ সালে যুবলীগের পদ পেয়ে অল্প সময়ে গড়ে তোলেন বিত্তবৈভব। জুয়া-ক্যাসিনোর টাকায় নামেন সিনেমা প্রযোজনায়ও।
সম্রাটের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সুবাদেই ২০১৩ সালে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতির পদ পান আরমান। সম্রাটের ছত্রচ্ছায়ায় কিছুদিনের মধ্যেই ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনো ও জুয়া-বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রকে পরিণত হন আরমান। তিনিই সম্রাটকে ক্যাসিনো ব্যবসায় আগ্রহী করেন বলে প্রচার আছে। সম্রাটের হয়ে পুরো ক্যাসিনো ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন আরমান।