আগস্টের সকল ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা: অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১, ১১:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগস্ট মাস ট্রাজেডির মাস। এই মাসটা আসলেই মনের ভেতরে কি রকম একটা রক্তক্ষরণ হয় সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান আইভি রহমান। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই অনেক মিশুক ছিলেন, সবার সাথে কথা বলতে ভালোবাসতেন। নির্ভীক অসীম সাহসী শহীদ বেগম আইভি রহমানের রক্তের ঋণ শোধ হবার নয়। জাতি তাঁর অবদান বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৪১তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ঢাবি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতা বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, আগস্ট মাস শোকাবহ মাস, বাঙালির ইতিহাসে কলঙ্কতম দিন ও অধ্যায় এ মাসে রচিত হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস আছে কিন্তু নারী, শিশু ও গর্ভবতী মহিলাসহ পুরো পরিবারকে হত্যা করার জঘন্যতম কাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও নেই এবং ২১ আগস্টে এই রকম নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ইতিহাসও পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও নেই। এই হত্যাকাণ্ডে আসলে আমরা যদি দেখি তাহলে দেখতে পাবো যে, ৭১ সালের পরাজিত শক্তি, ১৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি কিংবা ১৭ আগস্ট ও ২১ আগস্টের পরাজিত শক্তিরা কিন্তু একই সূত্রে গাথা। সেই একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা বার বার বাঙালিদের পরাজিত করার জন্য তারা সব সময় বঙ্গবন্ধু পরিবারকে খুঁজে নেই সব সময় কারণ তারা জানে এই পরিবারটিকে শেষ করে দিতে পারলে তাদের পৈশাচিক যে ষড়যন্ত্র আছে সেটা তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে। আগস্ট মাস আসলেই এরা সক্রিয় হয়ে যায়। আসলে এই পরাজিত শক্তির পেছনের যে উৎস আছে সেটা মূলত সেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি থেকে শুরু করে খুনি জিয়া থেকে এরপর খালেদা জিয়া-জামায়াত ইসলাম ও তারেক জিয়ার মাধ্যমে প্রতিবার এই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিরা বারংবার আঘাত করছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান আইভি রহমান। আইভি রহমান ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরব শহরের চণ্ডিবের এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ভৈরবের জিল্লুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তার নামের সঙ্গে যুক্ত করেন রহমান। তার বাবা জালাল উদ্দিন ছিলেন তৎকালীন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৮ বোন ৪ ভাইয়ের মধ্য আইভি রহমান ছিলেন পঞ্চম। ১৯৭১ সালে আইভি রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য এবং ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। উনি ছাত্র জীবন থেকেই অনেক মিশুক ছিলেন, সবার সাথে কথা বলতে ভালোবাসতেন। পরিশেষে বলতে চাই, ষড়যন্ত্রকারীরা বার বার হামলা করেছে এবং সামনেও করতে পারে। সুতরাং আমরা যদি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারি তাহলে আমরা সামনেও যেকোনো ষড়যন্ত্রকে প্রতিরোধ করতে পারবো।