রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ইউনাইটেড হসপিটাল। রোগীর সেবায় আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতার প্রত্যয় নিয়ে ১৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বুধবার (২৪ আগস্ট) বাদ জোহর হসপিটাল ও রোগীদের দীর্ঘায়ু কামনা করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও মিলাদের আয়োজনের মধ্যদিয়ে ইউনাইটেড হসপিটালের ১৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়।
এসময় ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মঈনউদ্দিন হাসান রশীদ এবং ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান, বোর্ড মেম্বার্স, চিকিৎসক, নার্স, পরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কেক কাটিং ও বিশেষ মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন হাসান রশীদ বলেন, ইউনাইটেড হসপিটাল ১৫ বছর অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের যে লক্ষ্যে নিয়ে এ হসপিটালের যাত্রা হয়েছিল, সেখানে ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই এবং হয়নি। আমাদের চেষ্টা থাকবে আমাদের প্রতিষ্ঠানকে একটা রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করানো, ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে তৈরি করা। আরও ১০ জনকে স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র বা হসপিটাল করার পরামর্শ দেওয়ার সময় যেন আমরা বলতে পারি যে তারা আমাদের গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানকে অনুকরণ করতে পারবে।
ইউনাইটেড হসপিটালের ১৫ বছর পূর্তিতে রোগীর ক্রমবর্ধমান চাহিদা অনুযায়ী হসপিটালের সেবার মান বাড়ানোর জন্য সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইউনাইটেড গ্রুপের অধীনে ‘ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড’র আওতাধীন কয়েকটি নতুন হসপিটালসহ সব মিলিয়ে সারা দেশে অচিরেই ১ হাজার ৭০০ শয্যা সক্ষমতাসম্পন্ন সেবা পরিচালনা হবে। এ সেবা উত্তরোত্তর বাড়ানো এবং সেবার মান ধরে রাখতে ইউনাইটেড গ্রুপ ও ইউনাইটেড হসপিটাল বদ্ধপরিকর।
এ সময় ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, ১৫ বছর ধরে প্রাইভেট হেলথ সেক্টরে আমরা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার এর বেশি রোগী এবং তাদের পরিবারকে আমরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছি। যার মধ্যে ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টেই এসেছে ২ লাখ ৩০ হাজার এর বেশি রোগী। অর্থাৎ মানুষ ইমার্জেন্সি মুহূর্তে আমাদের উপর আস্থা রেখেছে।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনাইটেড হসপিটাল স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে অবদানের কথা বলতে গিয়ে ফাইজুর রহমান বলেন, এছাড়া করোনাকালীন সময়ে আমাদের চিকিৎসক ও নার্সদের দলগত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রোগীকে সেবা প্রদান সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৭০ হাজারের বেশি রোগীকে করোনার যথাযথ সেবা দিতে সক্ষম হয়েছি। যাদের মাঝে ৯৭ বছরের বয়স্ক রোগী ও মাল্টি অর্গান ফেইলিওর সহ ৩৫০০ গুরুতর অসুস্থ রোগীও ছিলো, যাদের আমরা ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করে, সেবা দিয়ে সুস্থ করেছি। এছাড়া বাংলাদেশে প্রথম ইউনাইটেড হসপিটালে ট্রান্সক্যাথেটার এওর্টিক ভাল্ভ ইমপ্লান্ট পদ্ধতির চিকিৎসা, র্যাডিক্যাল সিস্টোপ্রোসটেটেকটমি উইথ অর্থোটপিক নিউব্লাডার রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি, বিরল হার্নিয়া সার্জারি, গর্ভবতী মায়ের কীটনাশক পান করার পর বিষাক্রান্ত নবজাতকের দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসায় সুস্থতা অর্জন, ক্যান্সার রোগীকে সফলভাবে ক্রোনোমডুলেটেড কেমোথেরাপী প্রয়োগ সহ অনেক সফলতার গল্প আছে আমাদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০০৬ সালের এই দিনে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইউনাইটেড গ্রুপের মালিকানা ও তত্ত্বাবধানে ইউনাইটেড হসপিটালের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।