*পুরো দমে চালু হচ্ছে অফিস-আদালত, বাস, লঞ্চ। *শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে লঞ্চ, বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার।
প্রকাশ: বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম আপডেট: ১১.০৮.২০২১ ১:০৩ এএম | অনলাইন সংস্করণ
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে অফিস-আদালত, বাস, লঞ্চ সবই লকডাউনের পূর্বের নিয়মে চলবে। এর আগে কয়েকবার লকডাউন তুলে দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু পুরোদমে সবকিছু চালু করা হয়নি। এবারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছুই চালু করে দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে সীমিত পরিমাণে গণপরিবহন চলাচল করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এসময় চলাচলকারী গণপরিবহনে বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া নেওয়া যাবে না, শুধু নিয়মিত ভাড়াই নিতে পারবে। এছাড়া, কোন পরিবহনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া যাবে না। পাশাপাশি লঞ্চেও নিয়মিত ভাড়াই নিতে পারবে। বেশি ভাড়া নিতে পারবে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সচল রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সারা পৃথিবীতে করোনার কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। সেই দিক থেকে দেশের অবস্থাও ভালো নেই। তবে এখন গণটিকা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। করোনা পরিস্থিতিও কিছুটা উন্নতির দিকে। সবাই এক সঙ্গে কাজ করলে এবং জনগণ যদি সচেতন থাকেন তাহলে পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতি হবে বলে মনে করছেন অনেকে। গতকাল বিধিনিষেধের শেষ দিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড স্পর্শ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৩ হাজার ১৬১ জনে। গত ৫ আগস্টও দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর এ বাস্তবতার মধ্যেই গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাতে বলা হয়, আজ বুধবার থেকে সব ধরনের অফিস ও কলকারখানা খোলা থাকবে। তবে প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, শপিংমল ও বাজার সকাল ১০টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিধি-নিষেধের অনুবৃত্তিক্রমে কিছু শর্ত সংযুক্ত করে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। শর্তগুলো হলো- সকল সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক খোলা থাকবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে। এছাড়া শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করবে।
পাশাপাশি লঞ্চের বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে সরকার লকডাউন শিথিল করলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় আবারও কঠোর লকডাউন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে এখানো সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে জানা গেছে, পুরোদমে টিকা দেওয়ার পর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বন্ধ থাকছে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র।