প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১, ৭:৪৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আফগানিস্তানে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গি গোষ্ঠি তালেবান। দেশটি থেকে বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার করার পর থেকেই তাদের দৌরাত্ব বেড়ে গেছে বহুগুণ। একের পর এক জেলা দখলে নিচ্ছে তারা। আর এতেই শেষ নয়। তালেবান তাদের দখলকৃত এলাকায় একটি নোটিশ জারি করেছে স্থানীয় মসজিদের ইমামদের উদ্দেশ্যে। সেখানে বলা হয়েছে, ১৫ বছরের বেশি মেয়ে এবং ৪৫ বছরের বয়সের নিচে যেসব বিধবা মহিলা রয়েছেন তাদের নামের তালিকা দিতে হবে।
এ ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটছে আফগান মেয়েদের। আর বাবাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে দুশ্চিন্তায়। মূলত যুদ্ধরত তালেবানদের জন্য পাত্রী খুঁজছে তারা।
তালেবানের কালচারাল কমিশনের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে দখলকৃত অঞ্চলগুলোর ইমাম কিংবা ধর্মীয় নেতার কাছে এ নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই তালিকা পৌঁছানোর তাগিদ রয়েছে চিঠিতে। বিয়ের পর পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে সংশ্লিষ্ট মেয়ে বা মহিলাকে। সেখানে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করার পর তারা হৃত গৌরব ফিরে পাবেন, এমনই দাবি তালেবানের।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, তালিকা হাতে পেতেই হিংস্র হয়ে উঠবে তালেবান। বাড়ি বাড়ি ঢুকে মেয়ের বাবাদের বাধ্য করবে বিয়ে দিতে। রাজি না হলে তুলে নিয়ে যাবে মেয়েদের। এভাবে একে একে প্রাপ্তবয়স্ক সব মেয়েকেই বিয়ে দেওয়া হবে যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা বিভিন্ন যোদ্ধাদের সঙ্গে।
এ ব্যাপারে হাজি রোজি বাইগ বলেন তার ২৩ বছর ও ২৪ বছর বয়সী দুই মেয়ে রয়েছে। ‘আমি তো বটেই, আমার পরিচিত যাদেরই মেয়ে আছে, সবাই দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। মেয়েরা আতঙ্কে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে শুধুই কাঁদছে। শুনতে পাচ্ছি, মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছে তালেবানরা।’
এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘সরকারের শাসনে আমরা কত শান্তিতে ছিলাম! অন্তত আমাদের স্বাধীনতা ছিল।’ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তালেবান দখল নেওয়ার পর থেকেই আমরা আশঙ্কায় ভুগছি। জোরে কথা বলতে পারছি না, গান শুনতে পারছি না, সিনেমা দেখা বারণ। এমনকি মহিলারা বাড়ির সামনে বাজারটুকু যেতে সাহস পাচ্ছেন না।’