ঈদে বাড়ি যাওয়া ও ফেরত আসা সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
প্রকাশ: শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১, ৯:৫৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি আনন্দ উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। কিন্তু ঈদুল আজহা ঈদুল ফিতরের মতো একদিনের নয়, এটা তিন দিন ধরে উদযাপিত হয়। এখানে পশু কোরবানি করার যে রীতি সেটার ব্যবস্থাপনা করাটা কিন্তু ব্যাপক চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারমধ্যে এরকম একটি অতিমারির মধ্যে এটি উদযাপন করা আরও বড় চ্যালেঞ্জ। দেশকে বাঁচাতে ও নিজের জন্য নিজেকে সচেতন হতে হবে। উৎসব ফিরে ফিরে আসবে। জীবন একটাই একবার চলে গেলে আর ফেরানো যাবে না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪০৩তম পর্বে শনিবার (১৭ জুলাই) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) এর চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি আনন্দ উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। কিন্তু ঈদুল আজহা ঈদুল ফিতরের মতো একদিনের নয়, এটা তিন দিন ধরে উদযাপিত হয়। এখানে পশু কোরবানি করার যে রীতি সেটার ব্যবস্থাপনা করাটা কিন্তু ব্যাপক চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারমধ্যে এরকম একটি অতিমারির মধ্যে এটি উদযাপন করা আরও বড় চ্যালেঞ্জ। এই রকম একটি পটভূমিতে বিভিন্ন জেলার যে পৌরসভা আছে সেখানে গ্রামে ফিরে গিয়ে এই রীতি সম্পন্ন করার যে অভিপ্রায় সেটা সংক্ষিপ্ত করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ এই যে যাওয়া আসা মানে গ্রামে যাওয়া ও সেখান থেকে আবার ফিরে আসা এই দুটিই কিন্তু সংক্রমণের মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। আমরা যেখানে লক্ষ্য করছি যে বর্তমানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের তুলনায় কিছুটা হলেও কমেছে। কিন্তু এই সপ্তাহ খানেকের মধ্যে যে জনচলাচল ও জনসমাগম আমাদেরকে একটু বেকায়দায় ফেলে দিবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে লকডাউন শিথিলের ৮ দিন ঈদে যানবাহন চলাচলের জন্য যে পাঁচটি শর্ত দিয়েছে বিআরটিএ, তা অধিকাংশ যানবাহন এখনই মানছে না। ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই ভোর ছয়টা পর্যন্ত সব যানবাহন চলবে বেঁধে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে। এরপর থেকে পরবর্তী ১৪ দিন সব ধরনের যানবাহন বন্ধেরও নির্দেশনা দিয়েছে বিআরটিএ। এখন দেখার বিষয় কতটা মান্য হয় সেই ১৪ দিনের বিধিনিষেধ। এখানে একটি বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের সারা বছর বসে থাকে এই দুই ঈদের জন্য। তাদের দোকানের যে পণ্যগুলো রয়েছে সেগুলো ক্রয়-বিক্রয়ের সার্কেলের সঙ্গে সংযুক্ত। সুতরাং সে বিষয়টাও মাথায় রাখতে হয়েছে। সেটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে এটা সম্ভব। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে যতই বলা হোক, তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। ঈদের পরে গণপরিবহন খোলা থাকছে মাত্র একদিন। ছয় বা সাতদিন ধরে যারা গ্রামে যাচ্ছেন, তারা যখন এ একদিনের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মস্থলে ফিরতে চেষ্টা করবেন তখন কি স্বাস্থ্যবিধি মানা ততটা সম্ভব হবে না। এই যে ব্যাপক সমাগম সেটার জন্য যতই কড়াকড়ি করা হোক না কেন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রায় অসম্ভব কারণ সেখানে যতই তাদেরকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হোক না কেন তাদের মধ্যে সংস্পর্শ হবেই।