করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ভেঙ্গে যাচ্ছে একটি সংসার। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের নওকুচি গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২১ বছর আগে উপজেলার নওকুচি গ্রামের আঃ বাছেদ মাষ্টারের ছেলে উত্তর ডেফলাই গ্রামের ছাবেদ আলী মাষ্টারের মেয়ে সালমা বেগমের সাথে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক রেজিষ্ট্রি কাবিন মুলে বিবাহ হয়। তাদের বিবাহিত জীবনে ২টি কন্যা সন্তানে জন্ম হয়। বড় মেয়ে সাদিয়া জান্নাত মিলি এইচএসসি পাশ, ছোট মেয়ে সুহানা জান্নাত লিলি স্থানীয় একটি স্কুলের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী। আবু সাইদ ময়মনসিংহের আরডিএস এনজিও’র সিনিয়র ক্রেডিট অফিসার পদে কর্মরত।
এতদিন তাদের একটি সুখের সংসার থাকলেও করোনায় আবু সাইদ আক্রান্ত হওয়ায় লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে তাদের সাজানো গোছানো সংসার। গত ১৯ জুন আবু সাইদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তারের পরামর্শে কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে চলে আসেন। ১৪ দিন পর করোনা টেস্টে আবারও পজেটিভ ধরা পড়লে স্ত্রী সালমা স্বামীর সেবাযতত্ন বন্ধ করে দিয়ে আবু সাইদকে তার নিজ বাড়ি ছেড়ে দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যেতে বলেন।
এ নিয়ে আবু সাইদ, ছোট ভাই লিটন স্ত্রী সালমার মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী সালমা স্বামী আবু সাইদের বাড়ি ত্যাগ করে বাবার বাড়িতে চলে গিয়ে গত ৮ জুলাই দেবর লিটনের নামে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। পরে ১৪ জুলাই গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে আপোষ মিমাংশা করে দিলেও পরিকল্পিত ভাবে ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় করোনায় আক্রান্ত স্বামীর বাড়ীতে গিয়ে আবু সাইদকে মারধর শুরু করে আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী হাসপাতালে প্রেরণ করলে অবস্থার বেগতিক দেখে স্বামী আবু সাইদকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সালমা তার বাবার বাড়িতে গিয়ে বিষপান করে। ফলে তছনছ হয়ে যাচ্ছে একটি সাজানো গুছানো সংসার।
আবু সাইদ বাদী হয়ে স্ত্রী সালমা সহ তার পরিবারের ৬ ব্যক্তির নামে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে করোনায় আক্রান্ত আবু সাইদ বলেন, আমি আমার বাবা-ভাইদের থেকে বহুদিন যাবৎ আলাদা বাড়ীতে বসবাস করে আসছি। আমি দুরে চাকুরি করার সুবাধে আমার স্ত্রী সালমা আমার সব জমাজমির ফসল সহ বেতনের সকল টাকা তার কাছে জমা থাকতো। সে তার ইচ্ছে মতো সংসার চালাতো। আমার আয় থেকে তার নিজ নামে ব্যাংক, কাল্ব সমিতি ও পোষ্ট অফিসে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ফিসড ডিপোজিট করেছে। আমি কখনো তাকে আলাদা কিছু মনে করেনি। অথচ আমার দুঃসময়ে আমার স্ত্রী আমার পাশে না থেকে আমাকে ফাঁসাতে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যাহা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
আবু সাইদের বড় মেয়ে সাদিয়া জান্নাত মিলি বলেন, করোনা আক্রান্ত আমার বাবাকে সেবা না করে নানুর বাড়িতে গিয়ে বিষপান করে বাবাকে শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করাটা আমাদের জন্য মোটেই সুখকর নয়। এই বাবাই আমাদের জন্য কতই না কষ্ট করেছেন। অথচ আজ তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যেুর প্রহর গুনছেন।
ঝিনাইগাতী থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান এ বিষয়ে একটি অভিযােগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।