নওগাঁর পত্নীতলার নজিপুর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতুর বিরুদ্ধে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই নজিপুর পৌর উদ্যানের সরকারি গাছ কাঁটার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে নজিপুর পৌর উদ্যানের সরকারি গাছ কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই কাটার নির্দেশ দেন ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতু । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, নজিপুর পৌর পার্কের গাছ কাঁটার সময় তারা কাউন্সিলর কে বলেছিলেন সরকারি গাছগুলো কাঁটতেছেন কেন? উত্তরে তিনি বলেন রাস্তায় লাইন এর জন্য খাম্বা প্রয়োজন যার কারণে এই গাছ গুলো কাঁটা হচ্ছে।
স্থানীয় যুবক সুজন কুমার বলেন ২০ -২২ টি গাছ কেটেছে যে গুলো দিয়ে এ-ই ওর্য়াডের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎের খাম্বা হিসাবে ব্যবহার করেছে।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নজিপুর পৌর পার্কে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ কর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে, রাতারাতি বেশ কিছু গাছের শেকড় তুলে ফেলা হয়েছে, আবার কোথাও কোথাও কাটা গাছের শেকড় বালি দিয়ে চাপা দিয়ে প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করা হয়েছে যাতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যায় ।
এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতুর সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি জানান, গাছগুলি কোথাও বিক্রির উদ্দেশ্যে নয় বরং নিজ নির্বাচনী এলাকায় পৌরবাতি স্থাপনের কাজে ব্যাবহারের উদ্দেশ্যে কাটবার নির্দেশ দিয়েছি।
কাউন্সিলরের এই বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন শিক্ষক জানান, গাছগুলো কাটবার সিদ্ধান্ত কাউন্সিলরের ব্যাক্তিগত, তিনি নিজের গা বাঁচাতেই এখন পৌরবাতির দোহাই দিচ্ছেন। শুধুমাত্র পৌর বাতির জন্য পৌর উদ্যানটিকে নদীভাঙ্গণের হুমকির সম্মুখীন না করে অন্যভাবেও সমস্যার সমাধান করা যেতো।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের মুখপাত্র আলমগীর হোসেন বলেন একটা গাছ কাঁটা মানে একটি প্রান হত্যার সামিল। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন ধৃষ্টতা দেখানোর সুযোগ না নেয় এজন্য তিনি এর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটি পত্নীতলা- এর সভাপতি সুমন কুমার শীল বলেন গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পৌর পার্কের সারি সারি এই গাছগুলোর শীতল ছায়ায় আগত দর্শনাথীরা খুঁজে পেতো প্রাণের ছোঁয়া । কিন্তু সেই পৌর উদ্যান আজ মরুভূমিসম। যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে নজিপুর পৌর মেয়র রেজাউল কবীর চৌধুরী'র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গাছ কাঁটার বিষয়ে তিনি আগে কিছু জানতেন না, পরে লোক মুখে ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারেন । খাস জমির গাছ সরকারি অনুমতি ছাড়া কাটার অধিকার কারুর নেই। অপরাধী যেই হোক না কেন, আইন তার বিধিবদ্ধ সিদ্ধান্তেই এগোবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) লিটন সরকার বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথে নায়েব কে তদন্তের জন্য বলা হয়েছে , যদি গাছগুলো সরকারি জায়গার হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভোরের পাতা/পি