প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১, ৮:০৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বেতাগীতে জনবল সংকটে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গত ১০ বছর ধরে নষ্ট হয়ে আছে এক্স-রে মেশিন। নেই এক্স-রে টেকনোলজিস্ট। সনোলজিস্ট্র না থাকায় অকেজো পরে আছে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন।
শূন্য রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (এনেসথেসিয়া) পদ। আউটডোর ও ইনডোরে রয়েছে ডাক্তার সংকট। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সংশ্লিষ্ট ডাক্তার না থাকায় মেজর কোন অপারেশনও করা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত জনবল নেই প্যাথলজি বিভাগে। এতে করে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। এমনকি দির্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ পুরাতন হাসপাতাল ভবনটি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে কাজ করতে হচ্ছে। হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ জরুরী স্থানীয়দের এমনই দাবি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৮টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১০ জন। এর ভিতর ২ জন চিকিৎসক অন্য হাসপাতালে ডেপুটেশনে কর্মরত। নার্সের ২৫টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৮ জন। মেডিকেল টেকনলোজিস্টের ৩ টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২ জন। কনিষ্ঠ কনসালট্যান্ট সার্জারি, মেডিসিন, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক সার্জারি, শিশু, চক্ষু, ইএনটি, ডেন্টাল, চর্ম ও যৌনরোগের কোনো কনসালট্যান্ট চিকিৎসক নেই। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অনেক অধিকাংশ পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা পরে থাকতে দেখা যায়।
অন্যদিকে দির্ঘ দিন যাবৎ ল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার চালু না থাকায় কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি বিকল হতে চলেছে। নেই কোন ফার্মাসিস্ট। উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাস্থল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটি দির্ঘ দিন যাবৎ নানা সমস্যায় জর্জরিত হলেও কতৃপক্ষের নজড় নেই। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সংশ্লিষ্ট ডাক্তার না থাকায় মেজর কোন অপারেশনও করা যাচ্ছে না। ফলে কাংখিত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। উপজেলায় করোনা সংক্রমণ দিন দিন উর্ধ্বগামী হলেও হাসপাতালে নেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি।
হাসপাতালে ভর্তি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের মোসা: নুরজাহান বেগমসহ একাধিক রোগীরা অভিযোগ করেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই নাজুক। ভর্তি হলেও সময়মত চিকিৎসকের দেখা মেলেনা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক ড. রবীন্দ্রনাথ সরকার জানান, চিকিৎসক সংকটের মাঝেও সাধ্যমত প্রতিদিন আউটডোর এবং ইমার্জেন্সিতে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছি। তবে এক্স-রে টেকনোলজিস্ট না থাকায় এক্স-রে মেশিন অচল অবস্থায় পরে আছে। জনবল সংকটের কারনে রোগীদের প্যাথলজি টেষ্টও ভাল ভাবে হচ্ছে না।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. তেনমং বলেন, স্বল্প জনবল দিয়েই আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। তবুও হিমশিম খেতে হয়। রোগীদের চাপ সামলাতে সব শূন্য পদে চিকিৎসক ও জনবল দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার দাবি ও আবেদন করা হয়েছে। এসব শূণ্যপদ পূরণ করা হলে রোগীদের উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
ভোরের পাতা/কে