টিকা কার্যক্রমে বাংলাদেশ এখনো এগিয়ে রয়েছে: ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১, ১২:২০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা খুবই সংকটজনক। ভয়ংকর এক পরিস্থিতির সম্মুখীন আজ আমরা। কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সব স্বাভাবিকতা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আমাদের পুরো জাতিকে মনোনিবেশ দিতে হবে কিভাবে এই করোনাকে প্রতিরোধ করা যায়, সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের বিষয়ে কোন আপোষ করা চলবে না। আমাদের এখন মানুষকে বাঁচাতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে। করোনা প্রতিরোধে আমাদের এখন কি করতে হবে সেটা আমরা সবাই জানি, কিন্তু বাস্তবায়নের দিক থেকে যেটা সবচেয়ে বড় বিষয় সেটাই হচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী করোনা মোকাবিলায় যে অগ্রগামী দেশ রয়েছে সে তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটা অগ্রগণ্য দেশ হিসেবে বিবেচিত।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩৯৩তম পর্বে বুধবার আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, বর্তমান মহামারি বা অতিমারি এটার একমাত্র সমাধান কিন্তু টিকা নয়। করোনার মত মহামারির ভ্যাকসিন বা টিকাও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নোংরা রাজনীতি চলছে। বাংলাদেশের সরকারের সাথে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও আমাদের বেক্সিমকো ফার্মার মধ্যে যে ৪০ মিলিয়ন টিকার সংগ্রহের চুক্তি হয়েছিল সেটা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা একদল লোক দেখতে পেয়েছি, যে তারা এটা নিয়ে একটা ধুম্রজাল সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছে। অথচ ভারতের মতো একটা দেশে যেখানে করোনার সব থেকে ভয়ানক ধরণ ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সেটা সেখানে খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার দ্বিতীয় বছরে বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে এই ভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ংকররূপ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। বর্তমানে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সুস্পষ্ট প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। মে মাসে ৪৫ শতাংশ ও জুন মাসে ৭৮ শতাংশ নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস আগামী বছর এই সময়ের মধ্যে যেন প্রত্যেক দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে ভ্যাকসিন দেওয়া নিশ্চিত করা হয়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন। কেবল যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বা ভারতের সেরাম নয়, আবিষ্কার ও সরবরাহের খবরদারিতে ভ্যাকসিন উৎপাদক ও নিয়ন্ত্রণকারীরা গোটা বিশ্বেই ‘ফ্যাক্টর’। ভ্যাকসিন কেনাবেচা-উপহার নিয়ে ক্যারিকেচার কেউ কম করছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগজনক ভাইরাস হিসেবে যে চারটিকে শনাক্ত করেছে তাদের মধ্যে ডেল্টা একটি। শুধু বাংলাদেশ নয়, আমেরিকা, ইউরোপেও উদ্বেগ আছে এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে তৃতীয় ঢেউ চলে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কিছু দেশে। আজ পর্যন্ত ৮০টি দেশে এটি ছড়িয়েছে এবং খুব কম সময়ে সহজে বিস্তার লাভ করছে। অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন শতাধিক মৃত্যু দেখছে বাংলাদেশ। এছাড়া সংক্রমণের হারও অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙছে। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সারাদেশে তৃতীয় দফায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাপী করোনা মোকাবিলায় যে অগ্রগামী দেশ রয়েছে সে অগ্রগামী মোকাবিলায় বাংলাদেশ জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটা অগ্রগণ্য দেশ হিসেবে বিবেচিত। এমনকি এই যে ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া যখন চালু হয় তখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেক দেশ কিন্তু পাইনি। সেখানে বাংলাদেশ এখনো অনেক এগিয়ে রয়েছে।