একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩শ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে তা ব্যবহার হচ্ছে বরাদ্দের এক তৃতীয়াংশেরও কম। এখানে একজন রোগীকে তিন বেলা যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তার বাজার মূল্য ৭০-৮০ টাকার বেশি নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেওয়া কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা।
ফলে একদিকে যেমন রোগীদের বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে অপরদিকে খাবার সরবরাহে করোনা ইউনিটে দর্শনার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বাড়ছে।
সরজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৭৪ জন করোনা রোগী। তাদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হচ্ছে একটি করে পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, আট টাকা দামের ডিম ও চার-পাঁচ টাকা দামের কলা। দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ এবং রাতের খাবারেও ভাতের সঙ্গে এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম।
বর্তমান বাজারদরে তিন বেলার খাবারের দাম হিসাব করলে দাঁড়ায় ৭০-৮০ টাকা। রোগীদের খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ফলমূল দেওয়ার কথা থাকলেও সেসব দেওয়া হচ্ছে না।
হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া রোগী আনোয়ার হোসেন জানান, ১০ দিন হাসপাতালে থেকেছি। কোন ধরনের ফল পাইনি। হাসপাতালের দেওয়া খাবারও আমি খেতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, সকালে নাস্তা হিসেবে একটা কলা দিয়েছিল সেটিও খাবার উপযোগী ছিল না। আর তরকারি দেখলে খাবার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যেত।
হাসপাতালে চিকিসাধীন করোনা রোগীর স্বজন পারুল বেগম বলেন, করোনা রোগীদের দেওয়া খাবার খুবই নিম্নমানের। রোগী হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেন না বলে বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে হয়।
সদর হাসপাতালের রাধুনী বলেন, ‘হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী যেভাবে খাবার সরবরাহ করছেন সেভাবে রান্না করে করোনা রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার খেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না, তাই তাদের খাবার দেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিপুন মোহন্ত বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের খাবার, ফলমূল ও খাদ্য সামগ্রি সরবরাহ করছি। করোনা রোগীকে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য বিতরণ করার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সব ধরনের খাদ্য পাওয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. নাদিরুল ইসলাম চপল বলেন, ঠিকাদার যেভাবে খাদ্য সরবরাহ করছেন সেভাবেই করোনা রোগীকে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক সময় ঠিকাদারের খাদ্য সরবরাহে সমস্যা হলে খাবারের মান খারাপ হতে পারে। এ ব্যপাওে তিনি বিষয়টি গুরুত্বেও সাথে খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
ভোরের পাতা/পি