কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিভিন্ন মেয়াদে ৫৫ বছর সাজা প্রাপ্ত ভারতীয় নাগরিক বিলাশের ওপর সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদের নির্দেশে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ মে সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ সেল এলাকায় নিয়মিত পরিদর্শন করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই দিন ভারতীয় নাগরিক বিলাশ (কয়েদি নাম্বার: ৭১৫১/এ), পিতা আব্দু মিয়া, গ্রামঃ এনচিনগর ,থানাঃ সুনাপুরা জেলাঃসিপাহীজলা, ত্রিপুরা, ভারত; এই নামের ভারতীয় বন্দী জেল সুপারের কাছে তার হাজত বাস ধরার জন্য নালিশ করে,সেলের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার অনুমতি চায়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি নির্ভযোগ্য সূত্র ভোরের পাতাকে ওইদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানিয়েছে, জেল সুপার শাহজাহান বিলাশের কথা পুরোপুরি শোনার আগেই ভারতীয় নাগরিক শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন।
এদিকে, সিনিয়র জেল সুপারের এমন আচরণ সহ্য করতে না পেরে সেলের বারান্দায় হাঁটার অনুমতি না দেওয়ায় কয়েদি বিলাশ নিজের মাথা সেলের দরজার মধ্যে মারতে থাকে, এতে তার কপালের চামরা ছিলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র বলেছে, এ ঘটনার পরই উক্ত বন্দির ওপর সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত বন্দিকে কেইস টেবিলে এনে হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে সিনিয়র জেল সুপার এর উপস্থিতিতে সহকারী প্রধান কারারক্ষী নং ২১৮০১ শাহনেওয়াজ এবং দুইজন দাঙ্গা ডিউটি কারারক্ষী মিলে তাকে বেধড়ক মারধোর করে আবার তাকে সেলে আটক রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতীয় নাগরিককে নির্যাতনের ৫ মিনিট ৪ সেকেন্ডের সিসিটিভির ফুটেজও ভোরের পাতার হাতে এসেছে। ঘটনার সময় জেল সুপার মোঃ আসাদুর রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও ভারতীয় বন্দী নির্যাতনের ইন্ধনদাতা বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি তাকে ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) পাঠালেও তিনি তার প্রতিউত্তর করেননি। পরবর্তীতে শুক্রবার বিকাল ৩ টা ৭ মিনিটে তিনি এ প্রতিবেদককে কল ব্যাক করে নিজের অবস্থান ব্যাখা করতে গিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বলেন, এটা তো প্রায় দেড় মাস আগের ঘটনা। ভারতীয় নাগরিক বলেই নির্যাতন করা হয়নি বলেও দাবি করেন। বারান্দায় হাঁটার অনুমতি দেয়া যায় না বলেও দাবি করেন সিনিয়র এই জেল সুপার।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিক শুনে এমন আচরণ সিনিয়র জেল সুপারের মতো কর্মকর্তার কাছে অপ্রত্যাশিত বলেও জানান তিনি।