প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ জুন, ২০২১, ১:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মৃত্যুবরণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বাদ রাখতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ যাতে বাস্তবায়ন না হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি উঠেছে সংসদে।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এ দাবি করেন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ তুলে ধরে শিরীন বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন কারণ দেখিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর যে সম্মান প্রদর্শন করা হয়, তাতে নারী ইউএনও যারা উপস্থিত না থাকেন বা তারা যাতে সেই কাজটি না করেন সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সেই সুপারিশ করা হয়েছে। আমি বিস্মিত, হতবাক ও ব্যথিত যে আমার সহকর্মীরা, এই সংসদের মাননীয় সংসদ সদস্যরা এমনটি উত্থাপন করতে পেরেছেন। সংবিধানে বলা আছে, নারী-পুরুষে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। সেই দেশে যখন এই ঘটনা ঘটে তখন আমরা স্তব্ধ হয়ে যাই। জানাজার সঙ্গে সম্মান প্রদর্শনের কোনো সম্পর্ক নেই।
স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের সামনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী, শুধু বাংলাদেশ নয় তিনি সারা পৃথিবীতে সুনাম অর্জন করেছেন; একজন নারী ও সফল নেতা হিসেবে। আজকে আপনি স্পিকারের পদে বসে আছেন। এই সংসদে আমার বোনেরা সব বসে আছেন।
তিনি আরও বলেন, একটি জেলায় একজন জেলা প্রশাসক স্মারকলিপি দিয়ে বলেছেন, কোনো হিন্দু ম্যাজিস্ট্রেট যেন মুসলমান বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এই সম্মান (গার্ড অব অনার) প্রদর্শন না করেন। কী অবস্থা তৈরি হচ্ছে আমাদের দেশে! স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দল যখন সরকারে, সেই সময়ে জঙ্গিবাদের উত্থান দেখি ফতোয়াবাজি দেখি। এই ধরনের ঘটনা যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থেকে আসে. তা কিছুতেই বরদাশত করা যায় না।
মৃত্যুর পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেয়ার সময় নারীদের চায় না সংসদীয় কমিটি। এজন্য যেসব এলাকায় নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রয়েছে, সেখানে বিকল্প খোঁজার সুপারিশ করা হয়েছে। গত ১৩ জুন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদানের ক্ষেত্রে দিনের বেলায় আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়।
ভোরের পাতা/ই