#করোনা মোকাবেলায় আ.লীগ বাদে অন্য রাজনৈতিক দল তেমন কাজ করেনি: সৈয়দ মোজাম্মেল আলী। #মহাবিপর্যয় মোকাবেলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনোই ভয় পান না: ড. শাহিনূর রহমান। #বাংলাদেশে ইসলাম নামে যে দল গুলো আছে সেগুলো পলিটিকাল ইসলাম: মাকসুদা সুলতানা।
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১১:৫৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ১৮২ জন। বাংলাদেশে সুস্থতার হার কিন্তু অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এই পর্যন্ত ৬.১৭ মিলিয়ন লোককে ভ্যাক্সিনেশন করা হয়ে যা মোট জনসংখ্যার ৫.৩%। হেফাজতে ইসলাম জামায়াতের মতো একই ধারায় ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়, তা সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের তাণ্ডব ও কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত পরিষ্কার। স্বাধীনতা মানে না বলেই তারা সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করার চেষ্টা করেছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩১১তম পর্বে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- যুক্তরাজ্য স্টাডি সার্কেলের চেয়ারপার্সন ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক মাকসুদা সুলতানা ঐক্য। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
সৈয়দ মোজাম্মেল আলী বলেন, আমি প্রথমেই করোনার বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি। ইউকে তে বর্তমানে ৪.৩৮ মিলিয়ন মানুষ করোনায় আক্রান্ত। এবং এই পর্যন্ত মারা গিয়েছে ১২৭ হাজার মানুষ। আর বাংলাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ১৮২ জন। বাংলাদেশে সুস্থতার হার কিন্তু অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এই পর্যন্ত ৬.১৭ মিলিয়ন লোককে ভ্যাক্সিনেশন করা হয়ে যা মোট জনসংখ্যার ৫.৩%। কিন্তু আমার খুব দুঃখ লাগে আমাদের দেশে যেসব রাজনৈতিক দল গুলো আছে বিশেষ করে যারা বিরোধীদল রয়েছে তারা কিন্তু দেশবাসীর কাছে খোলামেলাভাবে আবেদন করেন নাই যে, আসেন আপনারা সরকারের দেওয়া এই ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করুণ। আপনারা সোশ্যাল ডিসট্যান্ট মেনে চলেন, মাস্ক পরেন। সরকারের সাথে তো তাদের দ্বিমত থাকতেই পারে কিন্তু করোনার মতো এমন একটি জাতীয় দুর্যোগে আজ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল কিন্তু দেশবাসীর কাছে আবেদন করেননি এই বিষয়ে। এটা আমরা জাতি হিসেবে এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। আমি বিরোধীদলের কাছে আবেদন করবো তারা যাতে জনগণকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে সরকারের এই ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য। এখন আমি মৌলবাদ বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাচ্ছি। আসলে এই বিষয়ে আমি অনেক প্রোগ্রামে অনেক কথাই বলেছি। আসলে দেশে এখন যারা মৌলবাদী কাজ গুলো করছে তারা কিন্তু সেই একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি। এই যে হেফাজতের নেতা মামুনুল, তার বাবা কিন্তু একজন নামকরা রাজাকার ছিলেন। হেফাজতে ইসলাম জামায়াতের মতো একই ধারায় ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়, তা সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের তাণ্ডব ও কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত পরিষ্কার। স্বাধীনতা মানে না বলেই তারা সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করার চেষ্টা করেছে।
ড. শাহিনূর রহমান বলেন, আসলে করোনা আমাদের দেশে এভাবে আঘাত করবে তা আমরা কোনোভাবেই অনুমান করতে পারিনি। এ বছর মার্চের আগ পর্যন্ত দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০ এর নিচে। করোনাকে হারিয়ে দিয়েছি এই ভেবে তখন ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরকার সবাই আমরা মোটামুটি আশ্বস্তের দিন গুণতে থাকি। জনসমাগমের অনুষ্ঠান করতে থাকি। ধারাবাহিকভাবে খুলে দেওয়া হতে থাকে অফিস-আদালত, সুপার মার্কেট, বাস-ট্রেন ইত্যাদি করে চলাচল আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে উঠলো। আমরা এখনও এই বিপর্যয়কে পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। বুঝে উঠতে যে আরও সময় লাগবে সেটা বুঝতে পারছি। করোনার লাগাম টেনে ধরার সক্ষমতা এক বছরে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বিধ্বংসীরূপে হাজির হয়েছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ। সংক্রমণের সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। সামনে আরও বাড়ার শঙ্কার প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে চলছে কঠোর লকডাউন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এবং সেইসাথে অপরকে সুরক্ষিত দেওয়া এটা প্রত্যেকের দায়িত্ব। এইসময়টাতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও এর অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন গুলো দেশে করোনা মোকাবেলায় জনস্বার্থে প্রথম দিক থেকে যেমন কাজ করেছিল ঠিক একইভাবে এখনো জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছে এবং আমার জানা মতে ভোরের পাতাও এর সাথে জড়িত তাইতো তারা শুরু থেকেই এতো সুন্দর প্রোগ্রাম নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের এমন অবস্থায় হেফাজত কিছুদিন আগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করার জন্যই মোদির বিরোধিতার কথা বলে সারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। বিলম্বে হলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা যেনও ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করতে না পারে সে ব্যবস্থাই সরকার করবে বলে আমি আশা করি।
মাকসুদা সুলতানা ঐক্য বলেন, বাংলাদেশে এখন জামায়াতে ইসলাম বলেন, হেফাজতে ইসলাম বলেন আর যাই বলেন এরা আসলে পলিটিকাল ইসলাম। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে কিভাবে ধ্বংস করা যায় এবং এই অপশক্তিকে তারা লালন পালন করে, আশকারা দেয় এবং বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা আসে এদের লালন পালনের জন্য। বাংলাদেশে ইসলাম নামে যে দল গুলো আছে সেগুলো সব পলিটিকাল ইসলাম। ইসলাম কি বলে, ইসলাম বলে সহমর্মিতা কথা, সাহচর্যের কথা, কিন্তু তারা করছে উল্টোটা। হেফাজতের বর্তমান কমিটির অধিকাংশ জামায়াত-এর রাজনীতির সাথে যুক্ত। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনীতিতে যুক্ত। মোদিবিরোধী বিক্ষোভ ছিল মূলত বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী নস্যাৎ করার চক্রান্ত। তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে তালেবানি অভ্যুত্থান ঘটানো। আমরা পিছনে ঘুরে তাকালে দেখতে পাব, জোট সরকারের আমলে কাদের গাড়িতে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। আজকের ষড়যন্ত্রকারীরা সেসময় অনেক ছোট ছিল।