সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
থমকে গেছে কুমারপাড়া
ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১০:০০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় রয়েছে কয়েকটি কুমার পরিবার। বৈশাখ আসার কয়েক মাস আগে থেকে তাদের মাটির জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত লেগেছে বিলুপ্তির পথে থাকা মৃৎশিল্পের ওপর। লকডাউনসহ বৈশাখী মেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুমার পাড়ায় কর্মচঞ্চলতা নেই। গত বছরও করোনা পরিস্থিতির কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছিল। সরেজমিনে কুমার পল্লীতে দেখা গেছে, সুনশান নীরবতা। একদিকে মহামারি করোনা অন্যদিকে লকডাউন। মাটির তৈজসপত্র বিক্রি শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় সংসার চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাওয়া এই পরিবারগুলোর কপালে পরেছে ভাঁজ।

বাড়ির উঠানে খোলা আকাশের নিচে মাটির হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে ক্রেতাশূন্য দোকানে বসে থাকতে দেখা গেল ষাটোর্ধ্ব বয়সি শ্রীমতী রজলী পালকে। দোকানে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা মাটির থালা, প্রদীপ, ভাপা পিঠার খুলিসহ অনেক কিছুর দেখা মেলে সেখানে। যার অনেক কিছু যান্ত্রিক সময়ের চাপে হারিয়ে গেছে। অথচ এক সময় বাংলার হারিয়ে যাওয়া মাটির এসব জিনিসপত্র ছাড়া গৃহস্থালির কাজকর্ম করা প্রায় অসম্ভব ছিল। বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা মাটির ব্যাংক প্রকার ভেদে ১০ থেকে ৬০ টাকা, পাতিল ২০ থেকে ৪০ টাকা, গরুর খাবারের জন্য চারি ৩০ থেকে ৬০ টাকা, পানি রাখার কলস ৪০ টাকা, কবুতরের ঘর ১৫ টাকা, পাতিলের ঢাকনা ১০ থেকে ৩০ টাকা, মাটির ফুলদানি প্রকার ভেদে ২০ থেকে ৫০০
টাকা, ছোট বাচ্চাদের খেলনা প্রতি পিচ ১০ টাকা, মাটির থালা ৪০ থেকে ১৫০ টাকা, মগ ২০ থেকে ৮০ টাকা ফুলের টব ২০ থেকে ১০০ টাকা, বাটনা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, সাত পিঠার বাটি ৪০ টাকা, পানের বাটা ৩০ টাকা ও মাটির প্রদীপের
মূল্য মাত্র ২০ টাকা রাখা হয়েছে।

তবে মাটির দুষ্প্রাপ্যতার সঙ্গে শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মাটির তৈজসপত্র তৈরি ও বিক্রয়ে খুব একটা লাভের মুখ দেখছেন না তারা। তাদের অভিযোগ সরকারের অর্থনৈতিক সাহায্য সহযোগিতা না পেলে এ শিল্প টিকিয়ে রাখা কখনই সম্ভব হবে না।

মৃৎশিল্পের জাদুকর রামায়ণ প্রসাদ পাল বলেন, বাবু আমি এখন আমার বংশের ১৪তম পুরুষের হাল ধরে আছি। আমার তিন ছেলে বড়ছেলে মহেশ কুমার পাল এবং ছোটছেলে সঞ্জয় কুমার পাল। মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য ছেলেদের কাজ করতে বললেই বলে বাবা, মৃৎশিল্প দিয়ে আমাদের জীবন সংসার চলবে না। তবে আমার দ্বিতীয় ছেলে সন্তোষ কুমার পালই আমার বংশের একমাত্র শেষ ভরসা, সেই আমার ১৪ পুরুষের হাল ধরে আছে।

শুধু বৈশাখ নববর্ষ এলেই সাহেব-বাবুদের আমাদের কথা মনে পরে। বিশেষ করে পান্তা- ইলিশে আমাদের মাটির থালা দরকার হয়। এখন কেউ মনে রাখে না। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন আমাদের দিকে নজর না দিলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। আক্ষেপ করে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শ্রীমতী রজলী পাল।

ভোরের পাতা/পি



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


আরও সংবাদ   বিষয়:  থমকে   কুমারপাড়া  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]