হেফাজতে ইসলাম নেতা মুহাম্মাদ মামুনুল হক সাহেব অভিশাপ তো উল্টো লেগে গেছে। এই অভিশাপ কীসের জানেন?
এই অভিশাপ আমার বৃদ্ধ বাবার কোথাও থেকে পাওয়া ছদকা কিংবা লিল্লায় নয় বরং তিলে তিলে রক্ত ঘামে সারাজীবনের কষ্টার্জিত উপার্জনে গড়ে তোলা সাজানো ঘর বাড়ি সংসার পুড়ে ছাই করে দেওয়া ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাসের অভিশাপ।এই অভিশাপ আমার বৃদ্ধ মায়ের চোখের পানির অভিশাপ।
এই অভিশাপ আমার ঘর বাড়ির সঙ্গে আপনাদের দ্বারা জ্বালিয়ে দেওয়া পবিত্র কোরআন শরীফের কালো হরফের অভিশাপ।এই অভিশাপ আমার ভাইদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার অভিশাপ।
এই অভিশাপ একজন যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধার সারাজীবনের স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংগ্রহসহ সারাজীবনের অর্জিত সকল স্মৃতি পুড়ে ছাই করে দেওয়ার ফসল।
এই অভিশাপ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে শতশত মানুষের জীবন ও জীবিকা নিমিষেই পুড়ে ছাই করে দেওয়ার ফল। এই অভিশাপ ছেলে ছাত্রনেতা হওয়ার অপরাধে ঘরবাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি ঘরে থাকা অসুস্থ পিতা মাতার উপর হামলার অভিশাপ। এই অভিশাপ আপনাদের দ্বারা হত্যার শিকার ওয়ার্কশপে কাজ করা পথচারী আশিকের রক্তের অভিশাপ।
এই অভিশাপ আপনাদের দ্বারা হত্যার শিকার জীবন জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া একজন রিকশাচালকের স্ত্রী সন্তানের আহাজারির অভিশাপ।
এই অভিশাপ মিথ্যা গুজব রটিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মভীরুতা পুঁজি করে, এতিম অবুঝ শিশুদের দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার উদ্দেশ্যে রাস্তায় এনে রক্ত ঝরানোর অভিশাপ।
এই অভিশাপ একজন দরিদ্র মতিনের সারাজীবনের অর্জন ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেওয়ার অভিশাপ।
এই অভিশাপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, বাইতুল মোকাররম মসজিদকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো, হাজার হাজার মানুষের সব কিছু পুড়িয়ে সর্বস্বান্ত করে দেওয়ার, গরিব দুঃখী মানুষের ঘাম রক্ত নিঃসৃত হাহাকারের অভিশাপ।
আপনাদের অনেকেই মিথ্যা গুজব রটাচ্ছেন যে, আমি বা আমরা মাদ্রাসার ভেতরে ডুকে হামলা করেছি!! আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই কথাটি পুরোপুরি মিথ্যে বানোয়াট।
আপনারা যারা ধর্মব্যবসায়ী আছেন, ধর্মকে পুঁজি করে চলেন, আপনারা মনে রাখবেন-ইসলাম ধর্ম আপনাদের বাপ-দাদার কেনা সম্পত্তি নয় যে, আপনাদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য যখন তখন যাকে তাকে কাফের, নাস্তিক মুরতাদ ঘোষণা করবেন। ইসলাম যতটুকু আপনার ততটুকু আমারও। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম ধর্মে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করেছেন।
আর বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের আক্রোশের মূল কারণটি জেনে গেছে। আপনাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। আপনাদের আক্রোশের ধর্মীয় কোন ইস্যু নেই। আপনাদের আক্রোশ স্বাধীনতার ৫০ বছর মেনে না নিতে পারার, আপনাদের আক্রোশ এদেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশে।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা