প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১০:১৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ধর্মীয় উগ্রতা বলতে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো ধর্মের নামে উগ্র আচরণ করা, ধর্মের নামে অতি উৎসাহী হওয়া, এবং ধর্মের নামে অপ রাজনীতি করা এবং জনমনে ধর্মের নামে বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তি তৈরি করা, এবং মানুষকে ধর্মের নামে সহিংস কর্মকাণ্ডে লেলিয়ে দেওয়া। ধর্মীয় উগ্রতার শেষ কোথায়? আসলে আমরা তো আর ভবিষ্যৎ বলতে পারব না কিন্তু বাংলায় একটা কথা আছে 'পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে'। বর্তমানে এই উগ্রবাদীরা যে ভাষা ব্যবহার করছে ঠিক সেই ভাষায় একাত্তর সালে হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আল সামসরা বলেছিলেন। যে সমস্ত অরাজকতা হচ্ছে সেটা থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি যদি আমরা আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে পারি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩০৩তম পর্বে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- পিএসসি, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গবেষক ও লেখক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, বাংলাদেশ কালচারাল এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং লেখক মায়েদুল ইসলাম তালুকদার বাবুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
মায়েদুল ইসলাম তালুকদার বাবুল বলেন, বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মের একশ’ বছর আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর। এই সময়টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আক্রমণ করছে ৬ যুবক। খুন্তি দিয়ে, কুড়াল দিয়ে ম্যুরালটা নষ্ট করছে তারা। নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসেছেন, এটি প্রতিবাদ করার কিছুই নেই। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এসেছেন, হিন্দুত্ববাদী বিজেপির প্রতিনিধি না। তার জায়গায় অন্য কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকলে তিনি আসতেন। বায়তুল মোকাররমের হামলাকে পুঁজি করে শুক্রবার শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসা ছাত্রদের পাল্টা প্রতিবাদ। রাস্তা অবরোধ। পুলিশকে আক্রমণ। প্রতিবাদে ঝরে গেল চার জনের প্রাণ। আবার তার সূত্র ধরে আক্রমণ চলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এরা আসলে কারা? এরা আসলে একটা পরাশক্তি যারা ইসলামকে ব্যাবহার করে দেশে অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি করে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। তাহলে কি আওয়ামী লীগ ইসলামের বিরোধী? কখনোই না। আমরা যদি দেখি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কে করে গিয়েছে, বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছে। আমরা যদি দেখি, বিশ্ব ইজতেমার যে বিশাল একটা ব্যবস্থা কে করে গিয়েছে, এটাও বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছে। কাকরাইল মসজিদ, বায়তুল মোকাররম কে করে গিয়েছে, বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছেন। এখন তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সাড়া দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন, তারপরে মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন এনেছেন এবং এখান থেকে যারা প্রতি বছর বে হচ্ছে তাদেরকেও যথেষ্ট সম্মানী দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও তিনি করে যাচ্ছেন। এখন এই যে একটা পরাশক্তি ধীরে ধীরে একটা বড় শক্তিকে পরিণীত হচ্ছে এদেরকে আমরা কিভাবে পরাস্থ করতে পারি। আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নাশকতা চালায় হেফাজতের অনুসারীরা। আর এই উসকানির মূল হোতা এই মামুনুল হক। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যুদ্ধক্ষেত্রে ঠেলে পাঠিয়ে মামুনুল হক রিসোর্টে চলে যায় ফুর্তি করতে। এর আগে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অনুসারীদের বিপদে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ডও আছে এই মামুনুলদের। আমি মনে করি এখন যে সমস্ত অরাজকতা হচ্ছে সেটা থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি যদি আমরা আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে পারি।