নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা করতে গিয়ে হরতাল, সহিংসতা, পুলিশের ওপর আঘাত ও জাতীয় সম্পদ নষ্টের দায়ে অনতিবিলম্বে হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।
শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সরকারের পক্ষে ১৩টি সমমাননা ইসলামি দলের আয়োজনে এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, হরতাল পালন করে হেফাজতীরা সব মুরতাদ হয়ে গেছে। প্রকাশ্যে তওবা না করা পর্যন্ত তাদের পেছনে নামাজ হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দ্বীন-ইসলামেরর দৃষ্টিতে হরতাল করা হারাম। আর হারামকে হালাল মনে করে করলে বা হারাম কাজকে ইসলামী আন্দোলন বলে প্রচার করলে তারা মুরতাদ হয়ে যায়। শরীয়তের দৃষ্টিতে তাই হেফাজতীরা সব মুরতাদ হয়ে গেছে। প্রকাশ্যে তওবা না করা পর্যন্ত তাদের পেছনে নামাজ হবেনা, তারাবীহ ঈদের নামাজ কোনোটাই হবেনা। তারা মুসলমান বলে গণ্য হবে না। সরকারের উচিত হেফাজতী জামাতীদের প্রতি মুরতাদের শরঈ শাস্তি প্রয়োগ করা এবং অবিলম্বে হেফাজত-জামায়াত নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি সাধারণ মুসলমানদেরও উচিত তাদের বয়কট করা।
তারা বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অনন্য পর্যায়ে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের যথেষ্ট সুযোগ ও শক্তি রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ দাবীদার ভারতে দ্বীন ইসলামের উপর আঘাত; মুসলমানদের দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত; মুসলমানদের দ্বীন পালনের উপর আঘাত; সর্বোপরি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার উপর আঘাত ইত্যাদি সব কিছুর বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে নিবৃত্ত করার জন্য তীব্র ও জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণ করার।
বক্তারা বলেন, বিএনপি জামাত চাচ্ছে পুনরায় লকডাউন জারির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করার জন্য। মানুষ মারার জন্য এবং সরকারের বিরুদ্ধে জনগনকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য। কারণ কেবলমাত্র সরকারি হিসেবে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বা লকডাউনের অর্থনৈতিক ক্ষতি শিক্ষা খাতের ক্ষতি বাদেই প্রতিদিন ৫ হাজার কোটি টাকা হিসাবে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। প্রকৃত হিসেবে এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। তাই সরকারের উচিত হবে সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে নতুন করে আর লকডাউন কার্যকর না করা। বিএনপি-জামাতের পাতা ফাঁদে পা না দেয়া। করোনাতঙ্কের নামে আত্মঘাতী লকডাউন না দেয়া।
বক্তারা আরও বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফের বাংলা অনুবাদের দলীল-আদিল্লাহর মাধ্যমেই প্রমাণিত যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তথা সম্মানিত শরীয়তে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই। সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে বিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী ও শিরকী এর অন্তর্ভুক্ত।
তারা বলেন, নামাযের মধ্যে মুখমন্ডল খোলা রাখার নির্দেশ রয়েছে। নামাযের মধ্যে চেহারা ঢেকে রাখলে নামায মাকরুহ হয়। আর নামাযে মাকরুহ তাহরীমি হলে নামায দোহরায়ে পড়া ওয়াজিব। কাজেই মাস্ক পড়লে বা মুখমন্ডল ঢাকলে নামায হবে না। কাজেই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাশ হবেনা- এ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় শরীয়তবিরোধী কাজ মাস্ক পড়ার নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
মানববন্ধনে আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের পাতা/পি