প্রকাশ: শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজকের যে সমস্যা এটা কিন্তু কোনো নতুন সমস্যা নয়, এটা অনেক পুরাতন সমস্যা। বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু থেকেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ধর্মের নামে যে রাজনীতি তারা করছে সেটা অবৈধ যা আমাদের কোনো ধর্মেই নেই, কিন্তু তারা এটা ধর্মের নামে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের সবখানে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং তারা তা করতে পেরেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যারা জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত করে তারা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বিশ্বাস করে না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২৯৭তম পর্বে শুক্রবার (২ এপ্রিল) আলোচক হিসাবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা হাফিজুর রহমান আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, গণমাধ্যম কর্মী অঞ্জন রায়। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
অঞ্জন রায় বলেন, হেফাজতের প্রথম দিক থেকেই আমি বিশ্লেষণ করতে চাচ্ছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় তারা এর বিরুদ্ধে গিয়ে প্রথম মাঠে নামে এবং সেদিন তারা বলেছিল তারা একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম যা তারা আজও বলছে। অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম বললেও আমরা ৫ই মে শাপলা চত্বরের তাণ্ডব চালিয়েছিল। আমরা সেদিন কি দেখলাম, রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার নেতাকর্মী তাণ্ডব চালায়। সেদিনও ছোট ছোট বাচ্চা ছেলেদের মাঠে নামিয়ে তাদের সেই পৈশাচিক রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামপন্থী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কয়েক হাজার সদস্যরা কয়েকশ দোকান, গাড়ি ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন বইয়ের দোকানে লুটপাট করে। পরের কয়েকদিন বিভিন্ন জেলাতেও এই সংঘর্ষ হয়। তখন ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যু কিন্তু এখন ইস্যুটা হলো বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসেছেন, এটি প্রতিবাদ করার কিছুই নেই। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এসেছেন, বিজেপির প্রতিনিধি না। সে জায়গা থেকে কিন্তু রাজাপাকসে আমন্ত্রণ নিয়ে তাদের কোন কর্মকাণ্ড দেখেনি। এটা কিন্তু খুবই স্বাভাবিক হতো ডান পন্থিদের রাস্তায় দেখতাম, কিন্তু এবার উগ্র বাম পন্থিদের আমরা রাস্তায় দেখেছি। আমরা কিন্তু গো ব্যাক মোদি, গো ব্যাক ইন্ডিয়া শ্লোগান শুনেছি; তার মানে নরেন্দ্র মোদি কিন্তু সমস্যা না, সমস্যা হলো ভারত, যে ভারত যুদ্ধের সময় ১ কোটি বাঙালি শরণার্থীদেরকে জায়গা দিয়েছিল, যে ভারত বাংলাদেশের পাশে থেকে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। সেই ভারতকে নিয়ে তাদের জ্বালাতো থাকবেই! আপনারা খেয়াল করবেন ২৫ তারিখের পর কিন্তু অনেক দলেরই স্বাধীনতার ৫০ বছর নিয়ে আলোচনা সভা করে ছিল, কিন্তু তারা কি কোনো আলোচনা সভা করেছিল? প্রশ্ন করেন তাদেরকে, কোন সদুত্তর দিতে পারবে না তারা। তাদের যে লক্ষ ছিল তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের সবখানে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং তারা তা করতে পেরেছে। চোর চুরি করবেই, এবং এখনি সময় এসেছে আমাদের আরও শক্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এই সিদ্ধান্ত নিবে যারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির লোকেরা এবং যারা নিজের মধ্যে বাংলাদেশকে ধারণ করে। এবং এই সিদ্ধান্ত নিতে যদি আমরা ভুল করি তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের আরও পস্তাতে হবে।