হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল বলেন, মিডিয়ার শক্তি যদি পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশনের পর্দা হয়, তবে তাদের কাছে আছে সোশ্যাল নেওয়ার্ক।
শুক্রবার (০২ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, ২০১৩ সাল থেকে তো চেষ্টা করেছেন হেফাজতে ইসলামকে মাইনাস করতে। আপনাদের কাছে টেলিভিশনের পর্দা আছে, আমাদের কাছে সাড়ে ৩ লাখ মসজিদের মেম্বার আছে। আপনাদের কাছে যদি জাতীয় পত্রপত্রিকা থেকে থাকে, আমাদের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রয়েছে। জনগণকে আগের দিনের মতো বোকা ভাববেন না। মিডিয়াকে বলবো, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেন।
মিডিয়াকর্মীদের একটা কথা বলবো—মিডিয়া অনেক শক্তিশালী আমরা মানলাম।মিডিয়া শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু আপনারা যতই প্রভাবশালী হন, যতই শক্তিমান হন, পরিবেশ পরিস্থিতি যতই নিয়ন্ত্রণ করেন, মনে রাখবেন আল্লাহর চেয়ে আপনাদের শক্তি বেশি নয়। ইসলামের বিপক্ষে আপনারা অবস্থান গ্রহণ করছেন। প্রয়োজনে আপনাদেরও বয়কট করা হবে।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, শতবর্ষী জামিয়া ইউনুছিয়ায় যারা হামলা করলো, ওদের ব্যাপারে রিপোর্ট করতে পারেন না। যারা আমার মায়ের বুক খালি করলো, আমার ভাইকে খুন করলো, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে পারেন না। আপনারা পারেন হেফাজতে ইসলামের কল্পিত তাণ্ডবের কাহিনি রচনা করতে।
রাজধানীর দুটি মাদ্রাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে পাঁচ শতাধিক ‘কোরবানির ছুরি’ জব্দের তীব্র সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের নামে সরকার নাটক করছে। জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করতে হেফাজতে ইসলামের নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করছে সরকার। এ নাটক অনেক পুরনো, হেফাজতকে কলঙ্কিত করতেই সরকার এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছে।
ক্ষুব্ধ মামুনুল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এভাবে তাদের হেয় করে অভিযান চালিয়ে ছুরি জব্দ করা হলে আগামীতে বিনামূল্যে রাষ্ট্রের জন্য ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি থেকে বিরত থাকবে কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। তিনি আরও বলেন, আমরা কোরবানির ছুরি সংরক্ষণ হয়তো আর নাও করতে পারি। এই ছুরিগুলো দেশের কল্যাণে নিয়োজিত, এই ছুরিগুলো এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কোরবানির দায়িত্বে নিয়োজিত। বারবার এই ছুরি নিয়ে আপনারা (সরকার) নাটক করেন। কারা এই কাজ করল, জানতে চাই, মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
হেফাজতের এই নেতা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের কেউ ভুলক্রমে আবেগের বশে, না বুঝে প্রেস ক্লাবে কিংবা সাংবাদিকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকতে পারে। কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা সেটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছি। আমাদের কথা আপনাদের ভালো লাগলো না। আপনারা হেফাজতে ইসলামকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। মনে রাখবেন, যদি ইসলামকে বয়কট করেন, তো জনগণ মিডিয়াকে বয়কট করবে।
ভোরের পাতা/কে