শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
স্বাস্থ্য সুরক্ষা
জাওহার ইকবাল খান
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ০২.০৪.২০২১ ৩:০৫ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ জগত সংসারে আমাদেরকে তাঁর অসংখ্য নেয়ামত রাজি ধারা ঘিরে রেখেছেন। তার মধ্যে অন্যতম বিশেষ একটি নেয়ামত হলো সুস্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য সুন্দর হলে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের এবাদত এবং জাগতিক কাজকর্ম সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করা যায়, বলা হয় সুস্বাস্থ্য সুখের মূল।রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- সুসংবাদ সে ব্যক্তির জন্য যার আয়ু দীর্ঘ হয়, যার কর্ম সৎ সুন্দর হয়।


মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে সুন্দরতম আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং নিরাপত্তা ও সুস্থতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ ও যথাযথ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রদান করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন- আমি অবশ্যই মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম অবয়বে (সূরা তীন-৪)।
মহান আল্লাহ অন্যত্রে বলেছেন- তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন। তিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামতো আকৃতিতে গঠন করেছেন। (সূরা ইসফিতার ৬, ৭, ৮)।

মহান আল্লাহ মানুষকে সুস্বাস্থ্য দিয়েছেন এবং স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব উপায় উপকরণ দিয়েছেন। এ জন্য নিজের স্বাস্থ্যরক্ষা এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার চেষ্টা করা মানুষের অন্যতম প্রধান কর্তব্য।

স্বাস্থ্যরক্ষায় রসুলুল্লাহ (সা.) যা করতেন: ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা যা করা দরকার, রসুলুল্লাহ (সা.) তার সবটাই পালন করতেন। নিজের সাধ্যমতো স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার পর সুস্বাস্থ্য চলমান রাখার জন্য তিনি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। তিনি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা তিনবার করে এ দোয়া পাঠ করতেন- হে আল্লাহ আমাকে সুস্থতা দিন আমার দেহে শরীরে, হে আল্লাহ আমাকে সুস্থতা দিন আমার কানে এবং আমাকে সুস্থতা দিন আমার চোখে। (আবু দাউদ, মেশকাত-২১২)

ইসলামের সব বিধিবিধান স্বাস্থ্যরক্ষায় উপযোগী: মায়ের গর্ভধারণের সময় থেকে মানব সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের সূচনা হয় এবং মায়ের পেট একটি শিশুর প্রথম বাসস্থান। শরিয়তের নির্দেশনা রয়েছে শান্ত মনে আনন্দঘন পরিবেশে নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করে স্বামী- স্ত্রীর একান্ত মিলনের। এবং ইসলামে গর্ভবতী মায়ের প্রতি সব প্রকারের নিষ্ঠুরতা পরিহার করে মায়া মমতা দেখানো ও স্বাস্থ্য উপযোগী পরিবেশে তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন- সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং কম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী। (সূরা বাকারা ২৩৬)।

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন- আর সন্তানের অধিকারী অর্থাৎ পিতার দায়িত্ব হলো প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সততার সঙ্গে মায়েদের খোরপোশের ব্যবস্থা করা। (সুরা বাকারা-২৩৩)।

ইসলাম সব পরিচ্ছন্ন ও পুষ্টিকর খাদ্য মুসলমানদের জন্য বৈধ করেছে এবং খবিস, অপবিত্র ও ক্ষতিকর পণ্যসামগ্রী হারাম করে দিয়েছে। ইসলামে ঘোষিত সব হালাল খাদ্য স্বাস্থ্য উপযোগী এবং সব হারাম খাদ্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর পরিচয় বর্ণনা করে মহান আল্লাহ বলেছেন- তিনি তাদের নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু ও নিষিদ্ধ করেন খবিস বা অপবিত্র বস্তুসমূহ। (সূরা আরাফ-১৫৭)।

বস্তুত শূকরের মাংস মদ মৃতপ্রাণী ইত্যাদি ভক্ষণ মানব স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণভাবে ক্ষতিকর। পবিত্রতা অর্জন, ঢিলা, কুলুপ ব্যবহার, অজু করা, বীর্যপাতের পর গোসল করা, খাবারের আগে ও পরে হাত ধোয়া, পরিমিত পরিমাণে আহার করা, নিয়মিত বিশ্রাম নেওয়া, যথানিয়মে নামাজ আদায় করা, পারিবারিক পরিবেশকে আনন্দঘন করে রাখাসহ ইসলামের সব নির্দেশনা স্বাস্থ্য সুরক্ষার পক্ষে। সুতরাং এগুলো যথাযথভাবে পালন করে ব্যক্তি স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সাধ্যমতো কাজ করা সব নাগরিকের দায়িত্ব।

স্বাস্থ্যরক্ষায় চিকিৎসা গ্রহণের নির্দেশ ইসলামে রয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- মহান আল্লাহ রোগ অবতীর্ণ করেছেন এবং এর ওষুধও অবতীর্ণ করেছেন। সব রোগের জন্য তিনি ওষুধ সৃষ্টি করেছেন। সব রোগের জন্য চিকিৎসা করবে তবে হারাম বস্তুর চিকিৎসা গ্রহণ করবে না। (আবু দাউদ মেশকাত-৩৮৮)। আসুন আমরা সবাই ব্যক্তি স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেষ্ট হই। আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে সুস্বাস্থ্য দান করুন এবং তার এবাদত এবং শুকরিয়া আদায়কারী বান্দা হিসেবে কবুল করুন।

লেখক: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]