ক্রিকেট শিখতে বাংলাদেশকে আর কতটা পথ পাড়ি দিতে হবে? কবে বাংলাদেশ নিজেদের প্রমান করতে সক্ষম হবে? বর্তমান ম্যানেজমেন্ট থাকলে যেটি যে সম্ভব নয় তা গতকাল আর একবার প্রমাণিত হলো। কোন ভাবেই বাংলাদেশের ক্রিকেট আর মাথা কতুলে দাড়াতে পারবেনা। যতদিন বিসিবি আর বুড়োদের দাপট থাকবে।
এখন সময় এসেছে সবকিছু বদলানোর। বিসিবিকে বদলে ফেলা যেমন সময়ের দাবি তেমনি জংধরা ক্রিকেটারদের মাঠ থেকে বিদায় নেবার সময়। সেই সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকায় বিদেশি কোচ রাখার এই সূখবিলাস ত্যাগ করা জরুরি। এসব রাখা মানেআি স্বেতহস্তী পোষা। যা ক্রিকেটের কল্যানে কোন ভুমিকা রাখতে পারছে না। বরং এই বিসিবি, বিদেশি কোচ আর বড়বড় নামের ক্রিকেটারা দেশের ক্রিকেটকে খাদের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন।
এসব কারনেইএবারের নিউজিল্যান্ড সফর অনেকটাই বিনোদন সফরে রুপ নিয়েছে। গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টয়েন্টিতেও হেরেছে বাংলাদেশ।ফলে ৩ ম্যাচ সিরিজের ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল নিউজিল্যান্ড। টস জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং বেছে নেয়। আমন্ত্রন পেয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৭.৫ ওভারে তারা ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে।
বৃষ্টির কারনে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য বেধে দেওয়া হয় ১৬ ওভারে ১৭১ রান। জবাব দিতে নেমে একমাত্র সৌম্য সরকার বাদে আর কেউ সেভাবে জ¦লে উঠতে পারেননি। তবে ওপেনার নাঈম করেন ৩৬ রান। বরাবরের মত এবারেও ব্যর্থ হন লিটন দাস। সামনে থেকে যার নেতৃত্ব দেওয়ার কথা সেই দলনায়ক মাহমুদউল্লাহ সুবিধা করতে পারেননি। তিনি দলকে বিপদে ফেলে মাত্র ২২ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
গত ম্যাচে ভালো খেলা আফিফ হোসেন ধ্রুবও এদিন সুবিধা করতে পারেননি। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে বল হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন বোলাররা। জীবনের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে শরিফুল আগুণ ঝরানো বল করেন। উইকেটও মেলে। এছাড়া ইনিংসের খরচে বোলার ছিলেন তাসকিন আহমেদ। গতিতে বল করলেও তার বলের কোন ভেরিয়েশন না থাকায় কিউ ব্যাটারদের হাতে বেধকড় পিটুনি খান তিনি। এদিন সমীহ জাগানো বল না করতে পারার খেসারত দেয় বাংলাদেশ।
আবার ব্যাট করতে নেমে সেই চিরচেনা বাংলাদেশ। যদিও ব্যাতিক্রম ছিলেন সৌম্য সরকার। তার আউটের আগ পর্যন্ত জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে মড়ক লাগে বাংলাদেশ শিবিরে। দলের এই হতচ্ছিরি অবস্থা দেখে ভক্তরা তাদের বের করে দিয়ে নতুন খেলোয়াড় নামানোর দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে বিসিবির সকল কর্মকর্তার পদত্যাগ চেয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে বিসিবিসহ জাতীয়দলের সকল ক্রিরেকটারকে বদলানোর দাবি তুলেছে। একই সঙ্গে বিদেশি কোচের পরিবর্তে দেশিয় কোচ নিয়োগের দাবিও উঠেছে ।
ভক্তদের কথা, কত আর সহ্য করা যায়? হৈমন্তি শুক্লার সেই গানের মত, তুমি চলে গেলে.. আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম.. আমার বলার কিছু ছিলনা...
গতকালের খেলা: তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এক ম্যাচ বাকি থাকতেই হারল বাংলাদেশ। নেপিয়ারের ম্যাকলেন পার্কে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ হেরেছে ২৮ রানে। প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল হেরেছিল ৬৬ রানে।
আগামী ১ এপ্রিল সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। জয়ের জন্য ১৬ ওভারে ১৭১ রানের দরকার ছিল্ সেখানে সফরকারীরা১৬ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রান করতে সক্ষম হয়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন নাঈম শেখ। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে টিম সাউদি ২টি, হামিশ বেনেট ২টি, অ্যাডাম মিলনে ২টি ও গ্লেন ফিলিপস ১টি করে উইকেট শিকার করেন। বড় লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৩ রানে হামিশ বেনেটের বলে গ্লেন ফিলিপসের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ৫ বলে ৬ রান করেন লিটন।গতকালের আউটের পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাকে কেন ক্যারি করা হচ্ছে? নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার ৫২ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন। যেখানে মাত্র ২৫ বলে সৌম্য ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করেন। কিন্তু তারপর বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ২৭ বলে ৫টি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৫১ রান করে আউট হন তিনি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার তৃতীয় অর্ধশত।দলীয় ১১০ রানে ফিলিপসের বলে লং-অফে গাপটিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নাঈম। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৩৮ রান। শুরু হয় প্যাভিলিয়নে আসা-যাওয়ার পালা। অ্যাডাম মিলনের করা ১৪তম ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। পরের ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন মিথুন। শেষ ওভারে টিম সাউদির ক্যাচে পরিণত হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।এভাবে ১৬ ওভার খেলে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৪২ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর নিউজিল্যান্ড ইনিংস: ১৭৩/৫ (১৭.৫ ওভার)
(গাপটিল ২১, অ্যালেন ১৭, কনওয়ে ১৫, ইয়ং ১৪, ফিলিপস ৫৮*, চ্যাপম্যান ৭, মিচেল ৩৪*; নাসুম ০/২৫, সাইফউদ্দিন ১/৩৫, তাসকিন ১/৪৯, শরিফুল ১/১৬, শেখ মেহেদী ২/৪৫)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৪২/৭ (১৬ ওভার)
(নাঈম ৩৮, লিটন ৬, সৌম্য ৫১, রিয়াদ ২১, আফিফ ২, মিথুন ১, শেখ মেহেদী ১২*, সাইফউদ্দিন ৩, তাসকিন ০*; সাউদি ২/২১, বেনেট ২/৩১, মিলনে ২/৩৪, সোধি ০/৩৪, ফিলিপস ১/২০)।
ম্যাচসেরা: গ্লেন ফিলিপস (নিউজিল্যান্ড)