শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
করোনা প্রতিরোধে যা করার তা সরকারকেই করতে হবে
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ৩১.০৩.২০২১ ১২:৪২ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এই মহামারি নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই। মহামারির শুরু থেকেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন।

ভাইরাসটি যেহেতু মানুষে মানুষে ছড়ায় সেহেতু কিছু নিয়ম মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেটিকে থ্রি-সি বলে অবহিত করেছেন। যার ভিতরে রয়েছে নিয়মিত সুরক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার, জনবহুল স্থানগুলো এড়িয়ে চলা আর নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। করোনার প্রথম দিকে সাধারণ মানুষ এই বিষয়গুলো বেশ নিষ্ঠার সঙ্গেই মেনে এসেছেন।

মহামারিকালে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সময়েও বাংলাদেশ নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ অনেকটাই নিরাপদ বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করা হয়েছে। দেশে প্রথম ঢেউয়ের সময় যে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল পরবর্তীতে সেগুলো অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়ে। টিকা প্রদানের পর বিষয়টি মানুষের মনোজগৎ থেকে অনেকটাই উধাও হয়ে যায়।

সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে দেশ থেকে করোনার প্রভাব শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই তারা নিজেদেরকে আবার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সমাজিক দূরত্ব না মেনে, মাস্ক না পরে বিভিন্ন বিনোদন স্পট, পার্ক, সুপার মার্কেটে এমনকি দেশ ভ্রমণেও বেরিয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী  করোনা সতর্কতাকে উপেক্ষা করে অনেকেই সি বিচে সপরিবারে ভ্রমণেও যায়। করোনাকে অবহেলা করার খেসারত এখন জাতিকে দিতে হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরেই আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমনকী আক্রান্তের সংখ্যা  একদিনেই পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। ফলে মানুষ আবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি সরকারের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ রেখে সরকার করোনার বিস্তাররোধে ১৮ দফা প্রস্তাবনা ঘোষণা করেছে। তবে সরকারের এই ঘোষণা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাটে যারা চলাচল করছেন তাদের বেশিরভাগই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

এমনকি গণপরিবহনে যারা যাত্রী তাদের ভিতরে মাস্ক ব্যবহারের অনীহা স্পষ্ট। গণপরিবহনের চালক কন্ডাক্টরের জন্য মাস্ক পরিধান ব্যাধতামূলক হলেও অনেকেই এ বিষয়টি নিয়ে উদাসীন। এই সব কারণে দেশে করোনার প্রকোপ বেড়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

মাস্ক পরাকে ব্যধ্যতামূলক করতে এবং এ বিষয়ে গণসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সরকার বার বার বিষয়টির ওপর জোর দিলেও বাস্তব অবস্থা তা প্রমাণ করছে না। সরকারের বিভিন্ন ঘোষণার ভিতর দিয়ে জনগণকে মাস্ক পরার আবেদন জানালেও তা অনেকটাই অগ্রাহ্য হচ্ছে।

কিন্তু নিজেদের অবহেলায় যখন করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন দোষ দেওয়া হচ্ছে সরকারকে। যিনি সব সময় মাস্ক না পরে বাইরে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করছেন তিনিও মাস্ক না পরার বিষয়টি সরকারের ত্রুটি হিসেবে দেখছেন। জনগণের এই উদাসীনতার জন্য তিনি সরকারকেই দায়ী করছেন। যত দোষ নন্দ ঘোষের মতো সরকারকে সব অপবাদ মেনে নিতে হচ্ছে। কিন্তু মাস্ক পরিধান করা নিজের সুরক্ষার পাশাপাশি তার পরিবার এবং প্রিয়জনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সেদিকে উপেক্ষা করে যখন বিষয়টি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় তখনই স্পষ্ট হয় জাতির মন-মানসিকতার।

এক্ষেত্রে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, মাস্ক পরা একই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কাজে লাগাতে হবে। যারা করোনা প্রতিরোধে এ সব প্রতিষেধক বিষয়ে অনীহা দেখাবেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কোনোভাবেই একে উপেক্ষা বা অবহেলার সুযোগ নেই। সর্বাগ্রে মনে রাখা দরকার, দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এক্ষত্রে কোনোরকম অবহেলার সুযোগ নেই।

এমনকি সরকারের দায়িত্ব পালনে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা এই স্বাস্থ্য বিধি মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। সরকারকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে আগামীর ইতিহাস ক্ষমা করে না। সময় থাকতে সরকারকে এই বিষয়টির ওপর জোর দিতে হবে।

ভালোবেসে আপসে যদি কোনো কাজ না হয় তাহলে কঠোর হলে দোষের কিছু নেই। আমাদের বিশ্বাস সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।   







« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]