প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ, ২০২১, ১১:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
হাঁচি দিলেই নাক থেকে পোকা বেরিয়ে আসছে। গত কয়েক দিনে হাঁচির সঙ্গে তার নাক দিয়ে জীবন্ত পোকা বের হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন ধরে তার চোখ থেকে পানি ঝরছে অনবরত। পটুয়াখালী সদর উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকায় এক বৃদ্ধার সঙ্গে ঘটছে এমন ঘটনা।
৯৫ বছর বয়সী কুমুদিনী বালার নাক থেকে একে একে বের হচ্ছে জীবন্ত পোকা। গত শনিবার সকালে প্রথমে তার নাক একটি পোকা বের হয়ে আসে। এসময় স্বজনরা তাকে চিকিৎসককের কাছে নিয়ে গেলে রোববার ৬০টি ও সোমবার আরও ২০টি পোকা বের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল নগরীতে। চিকিৎসকরা বলেছেন, বৃদ্ধা কুমুদিনী বালার মাথার অংশের ভেতর পোকা বাসা বেঁধেছে। সবগুলো পোকা বের করার পর ওষুধ দিয়ে বাসা ধ্বংস করে দেয়ার পর তিনি পুরোপুরি সুস্থ হবেন।
কুমুদিনী বালা পটুয়াখালী সদর উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকার মৃত অমূল্য চন্দ্র হালদারের স্ত্রী। তিনি বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড সড়কে প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েল সিটি হাসপাতালের চার তলার ৪০২ নম্বর কক্ষে ইএনটি বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কুমুদিনী বালার ছেলে মন্টু হালদার জানান, তার মা কয়েক বছর আগে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হাত-পাসহ শরীরের বেশীরভাগ অংশ হয়ে অবশ হয়ে আছে। শনিবার সকালে তার নাক থেকে হঠাৎ করে একটি জীবন্ত পোকা বের হতে দেখা যায়। এতে আতংকিত হয়ে তাকে পটুয়াখালীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নেয়া হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেয়া হয়। ওইদিনই তাকে বরিশাল নগরীর ক্লিনিক রয়েল সিটি হাসপাতালে ভর্তি করে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ বলেন, প্রতিটি মানুষের নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরের একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। নাক অথবা কান দিয়ে পোকা শরীরে প্রবেশ করতে পারলে খালিস্থানে বাসা বাঁধে ও ডিম পেড়ে বংশবিস্তার ঘটায়। কুমুদিনী বালার ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি প্যারালাইসিসের কারণে দুই হাত নাড়াচাড়া করতে না পারায় ঘুমিয়ে থাকা বা অচেতন অবস্থায় পোকা তার নাক অথবা কান দিয়ে প্রবেশ করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। চিকিৎসা শাস্ত্রেএ রোগের নাম হচ্ছে ‘ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ অ্যান্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’।
তিনি আরও বলেন, কুমুদিনী বালার মাথার মধ্যে আরও পোকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নাক ও ভেতরের অংশ আরও কয়েকবার ওয়াস করে সব পোকা বের হলে সিটি স্ক্যান করে দেখা হবে। এরপর পোকার বাসাটি নির্ণয় করে ওষুধের মাধ্যমে বাসাটি ধ্বংস করা হবে।
চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ হলেন, এ ধরণের রোগে আক্রান্ত্র হওয়ার পর স্বজনদের নজরে না এলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
ভোরের পাতা/কে