প্রকাশ: সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১, ৩:৩৩ পিএম আপডেট: ২৯.০৩.২০২১ ৩:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামের বাসিন্দার একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ছোট যমুনা নদীর দুই তীরের লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর শুকনো মৌসুমে সাঁকো ও আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়েই চলাচল করে আসছে। একটি সেতু কিংবা ব্রিজের প্রয়োজন এই অঞ্চলের মানুষের এখন সময়ের দাবি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ছোট যমুনা নদী ভাগ করেছে জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাকে। এই নদীর পূর্ব পাশে রাণীনগর উপজেলার গোনা, কাশিমপুর ও আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ এবং পশ্চিম পাশে কালিকাপুর, হাটকালুপাড়া, বড় বিহানলী ও রাজশাহী জেলার বাগমারা ইউনিয়ন পরিষদ অবস্থিত। এর মাঝখানে রয়েছে ভূপনার ঘাঠ। এই ঘাঠ দিয়ে রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, ভবানীপুর, মির্জাপুর, মিরাপুরসহ প্রায় ৪৫টি গ্রাম এবং আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, বাউল্লা, তারানগর, শৈলিয়া, লালুয়া, গোন্ডগোহালীসহ প্রায় ৪৫টি গ্রমের হাজার হাজার বাসিন্দাদের ছোট যমুনা নদী পারাপারে একমাত্র উপায় শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা।
দেশ বর্তমানে ডিজিটাল উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত হলেও একটি সেতু কিংবা ব্রিজের অভাবে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এই জনপদের জীবন মান। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের নায্য মূল থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এই অঞ্চলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। যার কারনে প্রতিনিয়তই থমকে যাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের অর্থনৈতিক চাকা।প্রতিদিন এই ঘাঠ দিয়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ চলাচল করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াও শত শত শিক্ষার্থীদের এই ঘাঠ দিয়ে চলাচল করতে হয়।
রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর, ঘোসগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শহীদুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, বাপ-দাদার পাশাপাশি আমাদের ও বর্তমান প্রজন্মের জীবন কেটে গেলো বাঁশের সাঁকো আর নৌকা করে নদী পাড় হয়ে। আমরা জানি না আগামী প্রজন্মরা কি তাদের জীবদ্দশায় এই ঘাটে একটি সেতু কিংবা ব্রীজ দেখতে পাবে। শুকনো ও বর্ষা এই দুই মৌসুমেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই নদী পাড়াপাড়। ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।
আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের সময়ে এখানে একটি ব্রীজ নির্মানের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছিলো একনেক। ব্রীজ নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ১০-১২ বার ঘাটে এসে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও করে গেছেন কিন্তু আজোও সেই কর্মকান্ড আলোর মুখ দেখতে পেলো না। জানি না বর্তমানে কি অবস্থায় রয়েছে এই ঘাটে ব্রীজ নির্মানের পদক্ষেপ। তাই এই বিষয়ে লক্ষ মানুষের পক্ষে আমি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুল আলম বলেন, এই বিষয়ে নতুন করে একটি কর্মপরিকল্পনা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরবর্তি নিদের্শনা দিলে কাজ শুরু করা হবে।
ভোরের পাতা/ই