প্রকাশ: সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ২৯.০৩.২০২১ ১২:৩১ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়াসি রাজ্যের রাজধানী মাকাসারের গির্জায় বোমা হামলার ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। দুইজন আত্মঘাতী হামলাকারী এই হামলা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।
যদিও এখন পর্যন্ত এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি, কিন্তু ইন্দোনেশীয় পুলিশের দৃঢ় সন্দেহ দেশটিতে সক্রিয় ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী জামাহ আনসারুত দৌলা এজন্য দায়ী।
সেখানকার পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান বয় রাফলি আমর জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে সুরবায়া শহরের কয়েকটি চার্চ ও পুলিশ স্টেশনে এরকম আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৩০ জনেরও বেশি মানুষ।তিনি বলেন, ‘চলতি বছর জানুয়ারিতে মাকাসারের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছিল ইন্দোনেশীয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। সেই অভিযানে দুই জঙ্গি নিহতও হয়েছিল। সম্ভবত ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই এই হামলা চালানো হয়েছে।’
ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় পুলিশের মুখপাত্র আর্গো ইউয়োনাও একই সন্দেহ জানিয়ে বলেছেন, ‘বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি আমরা। ইতোমধ্যে আমাদের তদন্ত শুরু হয়ে গেছে।’
গতকাল রোববার সকালে যখন হামলার ঘটনা ঘটে, তখন ওই গির্জাটিতে প্রার্থনা সভা চলছিল। মাকাসারের মেয়র ড্যানি পোমান্ত জানিয়েছেন, গীর্জার পার্শ্ব প্রবেশপথে হামলা হয়েছে। যদি মূল প্রবেশপথে হতো, তাহলে আহতের সংখ্যা অনেক বেশি হতো। তিনি আরো বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ থেকে জানা গেছে একজন হামলাকারী গির্জায় প্রবেশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের বাধা দেওয়ায় সে ঢুকতে পারেনি।’
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া। তবে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য পরিমান খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস করেন। দক্ষিণ সুলায়াসি রাজ্যের বৃহত্তম শহর মাকাসারও তার ব্যতিক্রম নয়।
দেশটির ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকুত খলিল কুওমাস এক বিবৃতিতে গতকালের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘যে উদ্দেশেই ঘটে থাকুক, এ ধরনের কর্মকান্ড কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। কোনো ধর্মই অন্যের জানমালের ক্ষতি করাকে স্বীকৃতি দেয় নাইন্দোনেশিয়ার কাউন্সিল অব চার্চের প্রধান গোমার গুলতম এক বার্তায় বলেছেন, ‘নিষ্ঠুর অভিপ্রায়’ চরিতার্থ করতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
দেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধৈর্য ধারণ এবং কর্তপক্ষের ওপর আস্থা রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলা হয়েছিল ২০০২ সালে দেশটির বালি দ্বীপে। সেবারের আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০২ জন মানুষ, যাদের অধিকাংশই বিদেশি নাগরিক।ওই হামলার পর থেকেই জঙ্গি দমনে তৎপরতা শুরু করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত কয়েক বছরে তাদের অভিযানে দেশটিতে জঙ্গিবাদ অনেকটি নিয়ন্ত্রণেও এসেছিল; কিন্তু সম্প্রতি আবারও দেশটিতে মাথাচাড়া দিচ্ছে জঙ্গিবাদ।