বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না: অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা
প্রকাশ: শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১, ১০:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলাদেশ না হলে সার্বভৌম বাঙালি জাতির নির্দিষ্ট মানচিত্র তৈরি হতো না। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন, একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই বঙ্গবন্ধু ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২৮৪তম পর্বে শনিবার (২০ মার্চ) আলোচক হিসাবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বেলজিয়ামের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা বলেন, মার্চ মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবময় মাস। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আজ থেকে ১০০ বছর আগে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য এ মহামানবের জন্ম হয়েছিল। এই মাসেই তিনি সেই ঐতিহাসিক ভাষণ নিয়েছিলেন যা আজ সর্বজন স্বীকৃত। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ভাষণ সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ এবং স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। কোনো ধরনের আপোষের পথে না গিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ৩০ লাখ মানুষজীবন উৎসর্গ করে, যা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন। বঙ্গবন্ধু বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আটান্নর আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি সামরিক শাসনবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। বাঙালির অধিকার আদায়ের এসব আন্দোলনের কারণে বারবার কারাগারেও যেতে হয় তাকে। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা হয়। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু বেশিদিন দেশ গঠনের কাজ করে যেতে পারেননি। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নিজ বাসভবনে ক্ষমতালোভী ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর জীবনাবসান ঘটে। আসলে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলাদেশ না হলে সার্বভৌম বাঙালি জাতির নির্দিষ্ট মানচিত্র তৈরি হতো না। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন, একে অপরের পরিপূরক। একটিকে বাদ দিয়ে আরেকটিকে কোনো দিন কল্পনা করা যায় না এবং যাবেও না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল নেতা বা নায়ক হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।