আগামী এপ্রিল থেকে আফগান থেকে মর্কিন সেনা সরছে না এমনটিই মনে করছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের করা চুক্তি অনুযায়ী এপ্রিলের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর দিনক্ষণ ঠিক করা হচ্ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনা সরানো অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে করছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট। আফগানিস্তানে এখনো আড়াই হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। খবর ডয়চে ভেলের।
গত প্রায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে আছে মার্কিন সেনা। তালেবানের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চুক্তি হয়েছিল এপ্রিলের মধ্যে সব মার্কিন সেনা দেশে ফিরে যাবে। চুক্তিনুযায়ী ট্রাম্প বেশ কিছু সেনা সরিয়েও নিয়েছেন। বর্তমানে সেখানে আড়াই হাজারের মত মার্কিন সেনা রয়েগেছে।
সেনা ফেরানোর বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসিকে বাইডেন বলেন, ‘আমি এখন সিদ্ধান্ত নেব, কবে তারা দেশে ফিরবে? হতে পারে এপ্রিলের মধ্যে। তবে তা খুবই কঠিন।’
বাইডেনের এই মন্তব্যের পুতিক্রিয়া জানাকেত একটুও বিলম্ব করেনি তালেবান। তারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ১ মের মধ্যে মার্কিন সেনা দেশে ফিরে না গেলে তাদের ফলভোগ করতে হবে।সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তালেবানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমেরিকাকে দোহা চুক্তি মানতে হবে। মার্কিন সেনাকে ১ মের মধ্যে দেশে ফিরতেই হবে। কোনো যুক্তি দেখিয়ে বা কোনো ছুতোয় তারা যদি ফিরে না যায়, তা হলে যে পরিণতি হবে, তার জন্য তালেবান দায়ী থাকবে না।
বাইডেনের মন্তব্য এমন এক সময়ে যখন আফগানিস্তান নিয়ে মস্কোয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিশ্বের কয়েকটি দেশ। তার একদিন আগে এই মন্তব্য বৈঠকের ভবিষৎকে অনেকটাই অনিশ্চিত করে তুলবে বলে শঙ্কা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের। রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের নেতারা এবং তালেবানের প্রতিনিধিরা আফগান সমস্যা সমাধানের জন্য মস্কোয় বৈঠক করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞের মতে, শান্তি চুক্তি হওয়ার আগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেনা যদি আফগানিস্তান থেকে চলে আসে, তাহলে সেখানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। এমনিতেই ট্রাম্প সেনার সংখ্যা অনেকটাই কম করে দিয়েছেন। ২০০১ সালের পর এত কম মার্কিন সেনা কখনো আফগানিস্তানে থাকেনি।
বাইডেন বলেছেন, তালেবানের সঙ্গে ট্রাম্প যে চুক্তি করেছিলেন, তা খুব ভালোভাবে আলোচনা করে করা হয়নি। ট্রাম্পের পর তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর খুব সহজভাবে হয়নি। অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তাই এখন আফগানিস্তান নিয়ে তিনি সবদিক বিবেচনা করছেন।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে বাইডেন তালেবানের সঙ্গে চুক্তি আবার খতিয়ে দেখার দাবি করেছিলেন। বর্তমান চুক্তি অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্টকে অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকারে যারা থাকবেন, তার অর্ধেককে তালেবান মনোনীত করবে। কিন্তু আফগান প্রেসিডেন্ট এই শর্ত মানতে চাইছেন না।