সবাই এখন আওয়ামী লীগার, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের জন্য এটা শুভ সংবাদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ১২ বছর অতিক্রান্ত করল এই সময়ে এসে সবাই আওয়ামী লীগ হয়েছে। এটা রাষ্ট্রযন্ত্র, সমাজজীবন, রাজনৈতিক অঙ্গন, সব ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক। এক্ষেত্রে দলের অত্যন্ত সতর্ক হওয়া উচিত। সরকারেরও সতর্ক হওয়া উচিত।
বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেন নানক।
দলে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, নব্যদের ভিড়ে দুর্দিনের কর্মীরা এখন কোণঠাসা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যে স্তরেই ঢুকুক না কেন তারা কার হাত ধরে ঢুকছে? কারা দলে ঢোকাচ্ছে এটা দেখতে হবে। যারা ঢোকাচ্ছে তারা দলের জন্য বিরাট ক্ষতিকর কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমরা ’৭২ দেখেছি, ’৬৯ দেখেছি, ’৭৫ দেখেছি। সুযোগসন্ধানী মানুষ দলের বিপদের সময় পাশে থাকে না। দুঃসময় এলে এরাও থাকবে না। এরা কেউ আদর্শিক নয়। এরা এসেছে ক্ষমতার স্রোতে গা ভাসাতে। এরা ক্ষমতার সঙ্গে গা ভাসিয়ে স্বার্থসিদ্ধি আদায়ের চেষ্টা করে। দলের দুর্নাম এরাই করছে। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দলের ত্যাগী নেতা, দুঃসময়ের নেতা, ’৭৫-এর পর থেকে জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেছে, যুদ্ধ করেছে তাদের দ্বারা পার্টি বা রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতিকর কিছু হবে না।
তিনি বলেন, এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে দলকে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। দলের ভিতর থেকে ছেঁকে যারা সস্তা অনুপ্রবেশকারী বের করে দিতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য এখনো বলছি, আগেও বলেছি বলতেই থাকব কিন্তু এদের বের করা হচ্ছে না। এটাই হলো বাস্তব সত্য। নেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনাও দিয়েছেন এই মানুষগুলোকে দল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য। তারপরও এই মানুষগুলোকে কেউ বের করার উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এটি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক।
স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ থাকে বলেই দেখা যায় বিদ্রোহী বেয়াদবদের সমর্থন করেন অনেক মন্ত্রী এমপি।
তিনি বলেন, আমি নেত্রীর কাছে একটি বোর্ড মিটিংয়ে দাবি তুলেছি যারা বিদ্রোহ করেছেন যেসব মন্ত্রী, এমপি বিদ্রোহীদের ইন্ধন দিয়েছেন, মদদ দিয়েছেন, সমর্থন দিয়ে নৌকার বিরোধিতা করেছেন তাদের জন্যও চিরতরে নৌকা প্রতীক বন্ধ করে দেওয়া হোক। এ ব্যাপারে নেত্রী তালিকা তৈরি করছেন। আমি বিশ্বাস করি শেখ হাসিনার এই তালিকা তৈরির পর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। নৌকার বিরোধিতা করা মানে শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করা। শেখ হাসিনার সঙ্গে বেয়াদবি করা। বেয়াদবি যারা করবে তাদের দল থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া উচিত।