সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
অপরিকল্পিত খাল খননে দুর্ভোগ এলাকাবাসীর
প্রতিনিধি বাগেরহাট
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ১৩.০৩.২০২১ ২:৪৩ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

বাগেরহাটের চিতলমারীতে হক ক্যানেল (কাটা খাল) খননের ফলে নালুয়া-ভোলা সড়কের কয়েকশ ফুট ধসে খননকৃত মাটিতে খাল ও সড়কের পাশে বসবাসরত অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এর ফলে স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয়দের। এক ধরনের অবরুদ্ধ জীবন-যাপন করছে শতাধিক পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও খননকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও কোনো প্রতিকার পায়নি হতদরিদ্র মানুষগুলো।

এদিকে খননকারী কর্তৃপক্ষ বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য ভারতে থাকায় এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি অধীনস্থ কেউ। তবে জেলা প্রশাসন বলছে স্থানীয়দের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন কাজ হতে পারে না। নালুয়া-ভোলা ৪ কিলোমিটারের সড়কটির পাশে রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ ফুট চওড়া হক ক্যানেল (কাটাখাল)। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক খালটি খননের ফলে সড়কটির একাধিক স্থানে কয়েকশ ফুট ধসে গেছে। অনেক জায়গায় উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। স্কেভেটর দিয়ে ফেলা খননকৃত মাটিতে অনেকের ঘর ভেঙে গেছে। আবার মাটির নিচে চলে গেছে কারও কারও ঘরবাড়ি। একটা চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত ১১টি  ঘরের বেশিরভাগ অংশ মাটির নিচে চলে গেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

খননকৃত মাটির নিচে থাকা বাড়ির মালিক আকুব্বর শেখ, আনোয়ার সরদার, আমিনুর শেখ, সামাদ ব্যাপরীসহ কয়েকজন বলেন, ‘খাল খননের আগে আমাদেরকে কর্তৃপক্ষ সময় দেয়নি। আমরা বলেছিলাম এভাবে মাটি রাখলে আমরা কোথায় থাকব? কোনো কথা না শুনে ইচ্ছামতো মাটি ফেলে গেছে। এখন আমরা এক প্রকার অবরুদ্ধ রয়েছি। মাটির নিচে আমাদের কয়েক জনের ঘর ও মূল্যবান আসবাবপত্রও চলে গেছে।’

তারা আরও বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে গেলে তারাও কোনো সমাধান দিতে পারেননি বলে তারা জানান, ‘যারা খনন কাজে নিয়োজিত তারা প্রতিনিয়ত আমাদের ওপর অন্যায় করছেন।’

স্থানীয় রোজিনা বেগম ও রাহেলা বেগম বলেন, ‘রাস্তার পাশেই আমাদের ছোট টিনশেড বিল্ডিং। খাল খননের মাটিতে যাতে আমাদের ভবনের ক্ষতি না হয় এ জন্য কন্ট্রাক্টরের লোক উজ্জলকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। তারপরও মাটি দিয়ে আমাদের বিল্ডিংয়ের ক্ষতি করেছে।’

স্থানীয় পারুল বেগম বলেন, ‘খালের মাটি এমন ভাবে রেখেছে যে আমাদের ঘরের একটা অংশ মাটির নিচে চলে গেছে। পরে প্রায় ৫ হাজার টাকা ব্যয় করে ঘরের মাটি সরিয়েছি। কিন্তু মাটি সরালেও ঘরটি অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

এদিকে ধসে যাওয়ার ফলে চিতলমারী উপজেলাবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ নালুয়া-ভোলা সড়কে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মারাত্মক দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয়রা। ভ্যান ও সাইকেল ছাড়া অন্যকিছুও চলাচল করতে পারছে না ওই সড়ক দিয়ে। রবিউল ইসলাম, জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন ভ্যান চালক বলেন, প্রায় দুই মাস হলো এই রাস্তা ধসে গেছে। আমাদের ভ্যান চালানোও বন্ধ।

আসলে রাস্তা ধস ও মানুষের বাড়িঘরে মাটি ফেলায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা বর্ণনা করা যায় না বলে তারা বলেন, ‘খাল খনন করবে তো আমাদের উপকারের জন্য। কিন্তু এখন দেখছি এভাবে থাকলে আমাদের এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া রাস্তা মেরামত করে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের দাবি করেন তারা।’

শিক্ষার্থী আসিকুর ফকির ও ময়না খানম বলেন, ‘মাটি ফেলার ফলে আমাদের চলাচল একদম বন্ধ হয়ে গেছে। মাটিতে আমাদের ঘরবাড়িও ভেঙেছে। এলাকার অনেকের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে চাই আমরা।’

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কৃষ্ণেন্দু বিকাশ সরকার ভোরের পাতাকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তবে আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য মহোদয় ভারতে অবস্থান করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে আমরা কোনো কথা বলতে পারব না।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হক বলেন, ‘উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের জন্য। জনগণকে সেচ সুবিধা দেওয়ার জন্যই খাল খনন করা হচ্ছে। খালের পাশে অনেক খালি জমি রয়েছে। খননকৃত মাটি খালি জমিতে না রেখে যদি স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে রাখা হয়, তাতে যদি স্থানীয়দের বিছানাপত্র মাটির নিচে চলে যায়, রান্নাঘর মাটির নিচে চলে যায়, তা কোনো পরিকল্পনা মাফিক কাজ হতে পারে না। খাল খননের ফলে যাতে স্থানীয় জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।’



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


আরও সংবাদ   বিষয়:  বাগেরহাট   চিতলমারী   অপরিকল্পিত খাল  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]