প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা শিক্ষা-সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে সারাদেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে সারাদেশে শিক্ষা প্রসারে উদ্যোগ নিই। নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন শুরু করি। সেটাতে সাফল্যও পেয়েছি। শিক্ষাকে বহুমুখী করার পদক্ষেপ নিই। প্রযুক্তির শিক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ও আওয়ামী লীগ সরকার করে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট চায়নি এ দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক। তাই ৯৬-এ আমাদের নেওয়া উদ্যোগগুলো তারা বন্ধ করে দেয়।
শিক্ষার বিস্তার ও প্রসারে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি শিক্ষা-সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডে সহায়তা কামনা করেন। পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহায়তা করা এবং প্রতিষ্ঠিতদের যার যার প্রতিষ্ঠানে সহায়তার হাত বাড়ানোরও আহ্বান জানান সরকার প্রধান।
রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্ট থেকে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি-সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক কোটি ৬৩ লাখ ৮০০ শিক্ষার্থীর মাঝে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার শিক্ষা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করছি। ২০১০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ৩৬৬ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও করেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ২০১২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করি। এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। উচ্চশিক্ষায় ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে।
সরকার প্রধান বলেন, আধুনিক যুগে যে ধরনের বিষয় লাগে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি। আমরা মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, সিভিল এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। অর্থাৎ সাবজেক্টগুলো আমরা দেখে দেখে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় যে এলাকায় যে ধরনের শিক্ষার খুব বেশি গুরুত্ব আমরা সেইভাবেই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করে দিচ্ছি। দিচ্ছি এ জন্য যে সবাই যেন শিক্ষাটা যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারে। আর আমি মনে করি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা এটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটা শুধু দেশে না, বিদেশেও। আর আমাদের দেশে এ জন্যই প্রয়োজন..। আমি ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। সেখানে অনেক কারিগরি লোক লাগবে। দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। কাজেই সেই দক্ষ জনশক্তি আমরা সৃষ্টি করতে চাই। এই দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা ব্যাপক অবদানও রাখতে পারবে।
গণভবন প্রান্ত থেকে এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান প্রমুখ।