প্রকাশ: বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৪৮ এএম আপডেট: ২৭.০১.২০২১ ২:৪২ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকার প্রথম দিকের ১০টি সিনেমা হলের একটি আজাদ সিনেমা হল। পুরান ঢাকার সদরঘাটে তার অবস্থান (রায় সাহেব বাজার দিয়ে সদরঘাটের দিকে একটু এগোলে কোর্টের বিপরীতে)। এক সময় পুরান ঢাকার মানুষের কাছে অন্যতম প্রেক্ষাগৃহ হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন আর সেই সোনালী অতীত নেই ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহটির। জরাজীর্ণ ভবনের দেয়াল থেকে খসে পড়ছে ইট, সিমেন্ট, ভারী বৃষ্টিতে ভেসে যায়। চালানো হয় বি গ্রেড সিনেমা। দর্শক আকর্ষণের জন্য আজাদ ম্যানশনের দেওয়াল জুড়ে ছেয়ে আছে ‘বি গ্রেড’ চলচিত্রের পোস্টার, যা সুস্থ সংস্কৃতির ও উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন দর্শক টানতে সক্ষম নয়। এখন হলটি প্রায় দর্শকশূন্য। রিল নেই, সিনেমা দেখানো হচ্ছে কম্পিউটার আর পেনড্রাইভের মাধ্যমে।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ৮৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই হল। ‘বি গ্রেড’ সিনেমায় সয়লাব এবং রুচিহীন কর্মকাণ্ডে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দর্শক। বর্তমানে দর্শকের বদলে জায়গা করে নিয়েছে মাদকসেবী আর অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িতরা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব কর্মকাণ্ড চললেও নেওয়া হয় না কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।
‘বি গ্রেড’ সিনেমার নোংরা ও অশ্লীল পোস্টারের বিষয়ে পরিতোষ রায় বলেন, এই পোস্টারগুলো সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটরদের করা। আমরা পোস্টারিং করি না। তারা যদি এ ধরনের পোস্টার প্রদান করে, তাহলে আমাদের কী করার আছে? আমরা না করেছি এ ধরনের পোস্টার দেওয়ার জন্য। তবে আমরা সিনেমার ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে কথা বলে পোস্টার পরিবর্তনের বিষয়টা জানাবো। এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান ও জাতীয় চলচিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক জুনায়েদ আহমদ হালিম বলেন, সিনেমা বা এরকম হলগুলোর করুণ পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি।
প্রথমত, সিনেমা হলগুলো ব্যক্তিমালিকানায়। দ্বিতীয়ত, ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এফডিসি) ভিত্তিক সিনেমা নির্মাণের মান কমে যাচ্ছে, যার কারণে হলে সিনেমা দেখতে দর্শক হিসেবে যারা যান, তাদের বোধশক্তির জায়গা নি¤œ। সিনেমা যে একটা শিল্প; এর থেকেও যে শেখা যায়, সেটা আমাদের শিক্ষিত সমাজেরও জানার বাইরে ছিল। সিনেমায় সরকারি অর্থায়ন করতে হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখাতে হবে। তাহলে সিনেমা হলগুলোতে ভালো মানের চলচিত্র দেখা যাবে।