প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২১, ২:২৩ এএম আপডেট: ২২.০১.২০২১ ২:৪৯ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
গত একদিনে করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছেন ১৬ জন। এ সময় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮৪ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে করোনার মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩০ হাজার ২৭১ জন। আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭৪ জন। গত একদিনে করোনা রোগ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৬০২ জন। গতকাল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মোট মারা গেছেন ৭ হাজার ৯৬৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭৬১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বাংলাদেশে করোনায় প্রথম সংক্রমিত রোগী ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ, এই সংখ্যা ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৪ লাখ অতিক্রম করে যায়। যার মধ্যে গত ২ জুলাই সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়। সেই দিন ৪ হাজার ১৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর অর্থাৎ গত ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে। এরপর ১২ ডিসেম্বর এই মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে গেল। এই হিসেবের মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়। সেই দিন ৬৪ জন মারা যান। শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ওই মাসের শেষের দিক থেকে রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে চলে যায়।
আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এদিকে, বিশ^ করোনা রিপোর্ট প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, সারাবিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে এবং মৃতের সংখ্যার দিক থেকে ৩৬তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নি¤œমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের গড় দুই হাজার ছাড়ায়। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে নতুন রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কম। তিন সপ্তাহ ধরে পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে। চলতি বছরের অধিকাংশ দিন এক হাজারের কম রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৯ কোটি ৬৯ হাজার পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ ৭৫ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩০তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২০০টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৭৬১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২৮টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৪টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৪টি। গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ আর নারী ৫ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। সব মিলিয়ে সুস্থতার হার ভালো দাবি করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৪টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৪টি। গত একদিনে যারা মারা গেছেন, পুরুষের চেয়ে নারীর মৃত্যু কম হয়েছে। যেখানে ১১ জন পুরুষ আর নারী ৫ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মারা যান বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
আর বয়েসের হিসেবে ষাটোর্ধ্ব লোকের সংখ্যা বেশি। যেখানে ৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে জানা গেছে। আর বিভাগী হিসেবে ঢাকা বিভাগে সব চেয়ে বেশি। যেখানে মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের রোগী ছিলেন বলে জানা গেছে।